নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাবা-মায়ের ভালোবাসায় ভাগ বসানোর কারণেই শিশু মিম (০৪) কে হত্যা করেছে তারই আপন বড় ভাই আল-আমিন ওরফে সজিব (১৪)। বুধবার সকালে রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতেই র্যাব-১ আল-আমিনকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শাফী উল্লাহ বুলবুল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বনানী এলাকার ভ্রাম্যমাণ পেয়ারা ও আমড়া ব্যবসায়ী মোঃ লিটন মিয়ার দুই সন্তান আল-আমিন ও মিম। আর তার স্ত্রী রুপসানা অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে। বুধবার সকালে তারা দুজনেই কাজে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর বাসায় ফিরে লিটন মিয়া মিমকে খুঁজে না পেয়ে পার্শ্ববর্তী মসজিদে বিষয়টি ঘোষণা করে। এর কিছুক্ষণ পর বাসা থেকে কিছু দূরে একটি গোসলখানায় মৃত অবস্থায় মিমকে পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা লিটন মিয়া বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপরই র্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আল-আমিনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন জানায়, ছোট বোন মিম জন্মের পর থেকে তার প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা কমতে থাকে। যত দিন যায় বাবা-মা তার প্রতি উদাসিন হয়ে পড়ে এবং সব ভালোবাসা মিমের দিকে চলে যায়। তাকে কারণে অকারণে বাবা নির্যাতন করে। যার কারণে ছোট বোনের প্রতি তার ক্ষোভ জন্মায়। প্রতিদিন বাসায় ফিরে তার বাবা সবার আগে মেয়েকে কাছে ডকে নেয় এবং আদর করে। এমনকি তার জন্য বাইরে থেকে বিভিন্ন কিছু নিয়ে আসে।
সে আরও জানায় যে, বাবা-মা দুজনই তার ছোট বোনের সব আবদার পুরণ করলেও তার বেলায় বিপরীত ঘটনা ঘটে। তাই সে ছোট বোন মিম কে বাবা-মায়ের চোখের আড়াল করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি আটতে থাকে। যাতে করে সে আগের মত আদর,ভালোবাসা পেতে পারে। এর জন্য সে সুযোগের অপেক্ষা করতে থাকে।
এরই প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে সে তার বাবাকে ঘরের বাইরে যেতে দেখে এবং ঘরে ফিরে মিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। ঘরে বাবা-মা কেউ না থাকায় সে ঘুমন্ত মিমকে গলা টিপে হত্যা করে বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে তার বাবা বাসায় ফিরে মেয়েকে না পেয় খুঁজাখুঁজি করতে থাকে এবং বাসার বাইরে খুঁজতে যায়। এই সুযোগে আল-আমিন মিমের লাশ পাশের গোসলখানায় রেখে আসে।
তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।