মীর আলাউদ্দিন : রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত সোনাবানের শহর তুরাগ নদের তীরে আগামী ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে মূলধারার বিশ্ব ইজতেমা। এদিকে ইজতেমাকে সামনে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে ময়দান প্রস্তুতের কাজ। সিটি করপোরেশন, স্থানীয় প্রশাসন ও তাবলিগের সাথীরা পুরোদমে ময়দানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথমপর্বে সমবেত মুসল্লিদের ফেলে যাওয়া ময়লা আবর্জনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে এবং সড়ক ও জনপদের স্যুয়ারেজ লাইন ফেটে ময়দানে প্রবেশ করা পানি ইতোমধ্যে শুকিয়ে গেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অধিক জনবল নিয়োগ করে ময়দানের নিচুস্থানে বালি ফেলা, ময়লা আবর্জনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও চারপাশে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বিদেশ থেকে তাবলিগ অনুসারি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইস্তেমায়ী সামানা নিয়ে ইজতেমা ময়দানে জড়ো হবেন। তবে দ্বিতীয় পর্বের মূলধারার বিশ্ব ইজতেমায় উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক বিদেশি মুসল্লি ময়দানে অংশ নিবেন বলে আয়োজক কমিটি ধারণা করছেন। আগামী শুক্রবার বাদ ফজর আ’ম বয়ানের মধ্যদিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে ১৯ জানুয়ারি দুপুরে অর্থাৎ জোহরের নামাজের আগে যে কোনো এক সময় আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয়পর্ব তথা এবারের ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে। ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদে ৭টি ভাসমান পন্টুন সেতু নিমার্ণ করেছেন। ১৬০ একর জমির ওপর নির্মিত সুবিশাল প্যান্ডেলের কাজ, খুঁটিতে নম্বর প্লেট, খিত্তা নম্বর, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, মুকাব্বির মঞ্চ, বয়ান মঞ্চ, তাশকিল কামরা, পাহাড়া ও এস্তেকবালের জামাত তৈরি, হালকা নম্বর বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন (টঙ্গী অঞ্চল) উপ-সহকারি প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ময়দানে নতুন করে ৫শ’ ট্রাক বালি ফেলে উচুঁ করা হচ্ছে। এছাড়াও সিটি করপোরেশনের কনজারভেন্সী ৩শ’ ও বাইরের ২শ’ মোট ৫শ’ শ্রমিক একনাগাড়ে ময়দান প্রস্তুতের কাজ করে যাচ্ছে। দ্বিতীয় পর্বের মুসল্লিদের সুবিধার্থে ইজতেমার পুরো ময়দানে ৮শ’ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। এদিকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের কার্যক্রম চালানোর জন্য ময়দানের দায়িত্ব বুঝে পেয়েছেন মূলধারার ইজতেমা অনুসারীরা। সোমবার রাতে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃপক্ষের কাছে ময়দানের মাইক, লাইট, সামিয়ানার চটসহ যাবতীয় মালামাল বুঝিয়ে দেন শূরায়ী নেজামের মুরুব্বিরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট মো. শাহিনুর ইসলাম, সদস্য সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট এসএম সোহরাব হোসেন ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আবু হানিফ, টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি এমদাদুল হক, শূরায়ী নেজামের মুরুব্বি প্রকৌশলী মেজবাহ উদ্দিন, প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান, আবুল হাসনাত। মূলধারার অনুসারিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী শাহ মো. মুহিবুল্লাহ, আতাউল্লাহ জামান, প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ, হাজী মো. মনির হোসেন প্রমুখ। এব্যাপারে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাজী মো: মনির হোসেন বলেন, ময়দানের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এবার রেকর্ড সংখ্যক দেশি-বিদেশি মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। ময়দান এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ময়দানে অবস্থান নিবেন। যোগাযোগ করা হলে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের শীর্ষ জিম্মাদার প্রকৌশলী শাহ মো. মুহিবুল্লাহ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। ময়দান এখন পুরোপুরি ঠিক হয়েছে গেছে। বুধবার বিকেল থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করবেন।