আজ [bangla_date], [english_date]

স্ত্রীর শ্লীলতাহানির অপমান সইতে না পেরে সালিসের আগে স্বামীর মৃত্যু

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :  কুড়িগ্রামে স্ত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার অপমান সইতে না পেরে সালিসের আগের দিন ভুক্তভোগীর স্বামী (৭০) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করেছে তার পরিবার। উলিপুর উপজেলায় এক বৃদ্ধাকে (৬০) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।  গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল গুজিমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় মাতব্বররা মীমাংসার চেষ্টা চালায়। আজ বুধবার সালিস বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেন মাতব্বররা। এ সুযোগে মুনসুর আলী গা ঢাকা দেন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, গত ২২ মার্চ সকালে নদীতে গোসল করতে যায় গুজিমারী গ্রামের ওই বৃদ্ধা। এ সময় তাকে একা পেয়ে প্রতিবেশী মজা শেখের ছেলে মুনসুর আলী (৬২) ওই বৃদ্ধাকে জাপটে ধরে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা চালায়। তখন তার পরিধেয় কাপড় ছিড়ে যায়। এ অবস্থায় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই বৃদ্ধা দৌড়ে বাড়িতে এসে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজনকে ঘটনাটি খুলে বলে।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানায়, স্ত্রীর ওপর এমন নীপিড়নের ঘটনা মেনে নিতে না পেরে বৃদ্ধার স্বামী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীর স্বামী অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন। স্ত্রীর এমন ঘটনায় বৈঠক বসার কথায় বিব্রত হন তিনি। মিটিংয়ে এসব কথা শোনার আগে আল্লাহ যেন তার মরণ দেন। স্ত্রীর ওপর নির্যাতনের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। সালিসের আগেই গতকাল সকালে ফজরের নামাজরত অবস্থায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হলে মসজিদের পাশে একটি বাড়িতে আনা হয় তাকে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মুনসুর আলী এর আগেও এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছেন। ওই সময় স্থানীয় মাতব্বরদেরকে টাকার বিনিময় সামলে পাড় পেয়ে পান মুনসুর। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, স্ত্রীর কাছে এ ঘটনা শোনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই বৃদ্ধ। সালিসে বসতে মত ছিল না তার। বৈঠকে স্ত্রীর ওপর শ্লীলতাহানীর কথা শোনার আগে আল্লাহ যেন তার মৃত্যু দেয়, এমন দোয়া চেয়েছিলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে মুনসুর পলাতক রয়েছে।

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতেই মনসুর আলীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page