গত ২৪ ঘন্টায় ২৮ জন মারা গেছেন। কি সহজ মনে হচ্ছে তাই না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে সড়কে এরচেয়ে বেশি মারা যেত। হ্যা হয়তো যেত, আবার হয়তো নয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসে মারা যাচ্ছেই। তারচেয়ে বড় কথা আক্রান্ত পরিবারগুলোর কথা ভাবুন তো একবার। আমার পরিবারে আজ প্রায় ১০ দিন পর রান্না হলো। এই কদিন কি তাহলে না খেয়ে ছিলাম। না তা নয়। খেয়েই ছিলাম। আজকে ১২/১৩ দিন পর বাচ্চাদের কাছে গিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ। প্রতিদিন যে হারে আক্রান্তের হার বাড়ছে তাতে আগামী এক মাস কি হবে তা একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন৷ আজ থেকে চাার/পাচ মাস আগে চীনে আর ইতালীতে দলে দলে মানুষ মরত। আর আজ বাংলাদেশে দলে দলে আক্রান্ত হচ্ছে মরছেও। সময়ের কাজ সময়ে না করলে এমনটাই হয়। আজ আমি আক্রান্ত। পুরো পরিবার, বন্ধু, স্বজন বেদনাহত। কিন্তু কাল হয়তো আপনি আক্রান্ত হবেন। হয়তো মারাও যেতে পারি যে কেউ। এখন আর সাবধান কিংবা সচেতন থেকে বাচতে পারবেন বলে মনে হয় না। আক্রান্ত হয়তো হতেই হবে। এই যে দেখুন না বড় বড় ব্যবসায়ীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন। অনুমান করুন তো তারা কি সাবধান কিংবা সচেতন ছিলেন না। আচ্ছা বৃটেনের প্রাধানমন্ত্রী কি অসচেতন ছিলেন?ফলে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন আপনি হয়তো আক্রান্ত হবেনই। কিন্তু সাবধান হউন যেন না মরি। অথাৎ সারভাইব করতে হবে। এটা ভাবুন। আতংকিত না হয়ে চিকিৎসা নিন। আক্রান্ত হয়ে অন্যকে সংক্রমিত না করার কথা ভাবুন৷ আজ বাদ কাল ঈদ। এটা কিসের ঈদ। এটা ঈদ নয়। ঈদ মানে তো আনন্দ। আসলে কি পৃথিবীতে কোন আনন্দ আছে এই মুহুর্তে? নেই। নিশ্চিত থাকুন কালও হয়তো কেউ না কেউ আক্রান্ত হবেন। মারাও যেতে পারেন। তো কি করবেন সেমাই খাবেন নাকি লাশের গন্ধ নেবেন। পছন্দ আপনার। সুবিধাবাদীরা বলবেন আমি ভাই দুটোই নেব। প্রলয় হলেও পৃথিবী কি আর থেমে থাকবে৷ হ্যা থাকবে। থেমেই থাকবে। দেখেন না এখন তো সবই থেমে আছে। চাইলেও কিছু করতে পারবেন না। কোথাও যেতেও পারবেন না। অঢেল টাকা দিয়েও কিচ্ছু হবে না। তবে হয়তো মনটা স্বাভাবিক রাখতে আপনি সেমাইও খাবেন লাশের গন্ধও শুকবেন। যখন সচেতন থাকা দরকার ছিল তখন তো তা করিনি। বীরের মত ঘুরে বেরিয়েছি। প্রাবাসীদের ব্যবস্থাপনা করতে পারিনি। হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে পারিনি। এখনো পারছি না। সুরক্ষা সামগ্রীর কোনটাই ঠিকমত দিতে পারিনি৷ সো এখন জনগনকে থামিয়েও কিছু করতে পারবেন না৷ অবশ্য থামাতেও তো পারছেন না৷ এই যে আপনি মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আপনি কি জানেন কার মনের কি অবস্থা? আপনি কি জানেন কত মানুষ হাসপাতালে? আর কতজনের বাড়িটাই হাসপাতাল হয়ে গেছে। এসব তো ভাববেন না তাই না। ভাবার সময় নাই। কিন্তু করোনা ধরলে ঠিকই ভাববেন। পুরো পৃথিবী যেখানে দিশেহারা সেখানে আপনি ঈদের শুভেচ্ছা পাঠান। এটা তো রীতিমত মস্করা। পারলে দোয়া করুন। আর কিছু না পারলে হাত তুলে দোয়া করুন। নয়তো প্রিয়জনের লাশের গন্ধ কিংবা মৃত্যুযন্ত্রণা দেখার অপেক্ষা করুন।