আজ [bangla_date], [english_date]

মামীর পরকীয়া দেখে ফেলায় চোখ খুচিয়ে জখম করা হয় শিশু আলিফের

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : মামী রানী বেগমই তার দুই চোখ ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুচিয়ে জখম করে একটি পুকুরে ফেলে দিয়েছে। আর এই কাজে রানী বেগমকে সহায়তা করেছে তার পরকীয়া প্রেমিক দেবর আশিকুর রহমান। সাতক্ষীরার আমলি আদালতের বিচারক রাকিবুল ইসলামের এজলাসে ১৬৪ ধারার জবানবন্দীতে একথা স্বীকার করেছে তারা দুজন। বিচারক তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, ধারালো অস্ত্রে খুচিয়ে দুটি চোখ প্রায় নষ্ট করে ফেলার এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার কোন এক সময়। আলিফ হোসেন ফারহান(৬) নামের শিশুটি থাকতো তার নানীর বাড়িতে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার চর বালিথা গ্রামে। মা শারমিন বেগম মারা যাবার পর তার বাবা মঈনুদ্দিন সরদার দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই স্ত্রীর নির্যাতন থেকে ছেলেকে রক্ষার জন্য নানার বাড়িতে রেখে এসেছিলেন তাকে। আলিফ হোসেন চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্র।

দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তুহিনুজ্জামান জানান, গত সোমবার দুপুরের দিকে শিশু আলিফকে গুরুতর আহত অবস্থায় একটি পানিশূন্য পুকুরে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনাতে। পরে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলিফকে ভর্তি করা হয় ঢাকার জাতীয় চক্ষু ইন্সটিটিউটে। তিনি জানান, আলিফের মুখ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তার মামী রানী বেগম ও তার দেবর আশিকুর রহমানকে গ্রেফতার করে।

পরে আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীতে স্বীকার করে যে, রানী বেগম ও আশিকুরের পরকীয়া দেখে ফেলায় একটি ধারালো ছুরি দিয়ে তার দুটি চোখ খুচিয়ে অন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও তার গালে মুখে ও হাতে ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন ছিল। তবে এ ঘটনায় একে অন্যকে দোষারোপ করেছে আটককৃত দুজন। আলিফের বাবা পেশায় গাড়িচালক মঈনুদ্দিন সরদার জানান, আমার ছেলেটিকে স্ত্রীর অত্যাচার থেকে রক্ষার জন্য নানীর কাছে থাকতে দিয়েছিলাম, সেই নানীর বাড়িতেই মামী রানী বেগম তার উপর এই নৃশংসতা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, আমার আলিফ নিজের মাকে হারিয়ে রানী বেগমকে ‘মা’ বলেই ডাকতো। অথচ রানী বেগম তার জবাব দিলো নৃশংসভাবে। এভাবেই তার মা ডাকার স্বাদ মিটিয়ে দিলো। এ ঘটনার বিষয়ে মঈনুদ্দিন সরদার বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় ০৪ নং মামলা দায়ের করেছেন। তিনি একটি ছোট বাচ্চার উপরে এমন নৃশংসতা চালানোর কঠিন বিচার দাবী করেছেন।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page