আজ [bangla_date], [english_date]

ব্যবসায়িক চক্রান্তেই আবু সাদাত হেলালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার
অষ্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নিন্দা প্রতিবাদে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিনিধি : অষ্ট্রেলিয়ায় অধ্যায়নকারী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশি স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, অষ্ট্রেলিয়া’ এক বিবৃতিতে অষ্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটির জনপ্রিয় মুখ আবু সাদাত হেলালের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন অপপ্রচারসহ যাবতীয় ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়েছে। সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ড. ফজলুল হক বিশ্বাস, সভাপতি অধ্যাপক জোবেদুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক এডভোকেট নূরুন্নাহার কোরেশী এ প্রতিবাদ বিবৃতিতে সাক্ষর করেন।
সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টাসহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আবু সাদাত হেলাল ও তার প্রতিষ্ঠিত এইচবিডি অস্ট্রেলিয়া নামের ইমিগ্রেশন ও স্টুডেন্ট ভিসা কনসালটেন্সি ফার্মটি গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে অষ্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। তার সহায়তায় এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি তরুণ অষ্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণসহ চাকুরি ও ব্যবসা বাণিজ্যে প্রতিষ্ঠিত অবস্থান সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন। আজও তারা নানা সমস্যা ও বিপদ আপদে আবু সাদাত হেলাল ও তার প্রতিষ্ঠিত এইচবিডি অস্ট্রেলিয়ার দ্বারস্থ হয়। বাংলাদেশিদের জন্য কল্যাণকর হিসেবে পরীক্ষিত আবু সাদাত হেলাল ও তার প্রতিষ্ঠিত এইচবিডি অস্ট্রেলিয়াকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই একটি মহল নানারকম পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধু ব্যবসায়িক বিরোধকে পুঁজি করে চিহ্নিত সংঘবদ্ধ চক্র ভূয়া নারীঘটিত কেলেঙ্কারী যুক্ত করে আবু সাদাত হেলালের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করতে চায়। তারা মূলত হেলাল সাহেবের মালিকানাধীন এইচবিডিকে ধ্বংস করে সেই ব্যবসা হাতিয়ে নেয়ার মানসিকতাতেই এসব অপপ্রচারের জন্ম দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, আমরা সংঘবদ্ধ চক্রে সম্পৃক্ত সকলের নামধাম, পরিচয় এরইমধ্যে জানতে পেরেছি। তারা বরাবরই অষ্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নানারকম বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়ে থাকেন। এসব চক্রান্ত থেকে বিরত না থাকলে তাদের সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলেও বিবৃতিতে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে।

ভাইরাল হয়ে উঠেছে হেলালের প্রতিবাদ
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আবু সাদাত হেলালের পাঠানো প্রতিবাদলিপিটি এখন ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। অষ্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্বত্রই হেলালের ব্যাখ্যা সংবলিত প্রতিবালিপি নিয়েই জমে উঠে আলাপ আলোচনা। কমিউনিটির প্রবীণ সদস্যদের মধ্যে আবু সাদাত হেলালের প্রতি সহানুভূতি ও ভালবাসারই বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে। তারাও মনে করেন, ব্যবসায়িক চক্রান্তের অংশ হিসেবেই আবু সাদাত হেলালের অর্জিত সম্মান ধ্বংস করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। হেলালের প্রতিবাদপত্রটি এখানে হুবুহু তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশি নাগরিক আবু সাদাত সুদীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে অষ্ট্রেলিয়ায় পড়াশুনা শেষে চাকরি এবং সর্বশেষ ইমিগ্রেশন ও স্টুডেন্ট ভিসা কনসালটেন্সি ফার্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অষ্ট্রেলিয়ায় শিক্ষা গ্রহণের যাবতীয় সেবা প্রদানসহ মর্যাদাপূর্ণ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। এই সুদীর্ঘ সময়েও আমার বিরুদ্ধে নারীঘটিত কোনো কেলেঙ্কারির অভিযোগ দূরের কথা থানা পুলিশের কাছে তুচ্ছ কোনো অভিযোগ উত্থাপনেরও কোনো নজির নেই। বরং সব সময়ই প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপদে আপদে তাদের পাশে সর্বোচ্চ সহানুভূতিমূলক ভূমিকা রেখে থাকি। এসব কারণে সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে যথেষ্ঠ গ্রহণয্গ্যেতা সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের ভালবাসাতেই বারবার আমি বাংলাদেশি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছি।
অজ্ঞাত এক নারীর কথিত অভিযোগ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনের আজকের সংখ্যায় আমাকে ঢালাওভাবে, একচেটিয়া লম্পট, প্রতারক ইত্যাদি নানা বিশেষণে আখ্যায়িত করা হয়েছে তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং নিঃসন্দেহে আক্রোশমূলক। এমন সব গুরুতর অভিযোগ একচেটিয়া উত্থাপন করা হয়েছে অথচ অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে আমার ন্যূনতম বক্তব্য নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি প্রতিবেদক। রীতিমত তিনি নিজেই বিচারকের আসনে বসে দন্ডমুন্ডের কতা সেজে আমার বিরুদ্ধে যেন মনগড়া রায় দিয়ে দিলেন। কিন্তু আমরা বরাবরই দেখে আসছি অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনসূচক বক্তব্য প্রদানের সুযোগ বরাবরই গণমাধ্যমগুলো দিয়ে থাকে। তাহলে আমি সে সুযোগ বা অধিকার থেকে বঞ্চিত হলাম কেন?

আরেকটি বিষয় সদয় বিবেচনার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার বিরুদ্ধে লাম্পট্যের একটি (অজ্ঞাত) অভিযোগ উত্থাপন করতে গিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ বিবরণ এবং বাংলাদেশে থাকা অফিসের সম্পূর্ণ ঠিকানা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সুনামের সঙ্গে পরিচালিত আমার ব্যবসা কেন্দ্রটির বিরুদ্ধে একটি জনমত গড়ে তোলার অপচেষ্টা মাত্র। অষ্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী এমন গুরুতর অভিযোগ করা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বরং কঠিন ধারায় তার বিরুদ্ধে জরুরি বিচারকার্য পরিচালনাসহ কঠোর শাস্তি প্রদানই হচ্ছে সেখানকার সাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া। তাছাড়া চ্যালেঞ্জ দিয়ে জানাচ্ছি, অষ্ট্রেলিয়ার কোনো থানা পুলিশ কোনদিনও আমাকে কোনো কারণেই নোটিশ করেনি, ডেকে নেয়নি এমনকি কোনো ব্যাপারে আমার থেকে মুচলেকা আদায় করার ঘটনাও সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
প্রতিবেদনটিতে মিথ্যার বেসাতি ছড়িয়ে মনগড়া ভাবে স্বপ্নে দেখার মতো একের পর এক অভিযোগ তুলে বলা হয়, সিডনীতে অসংখ্য তরুণি আমার লাম্পট্যের শিকার হয়েছেন। অবাক হওয়ার মতো সাংবাদিক কান্ডের সীমাহীন ফঁদে যেন পড়েছি আমি। বাস্তবে এদেশে স্টুডেন্ট কনসালটেন্সী বাণিজ্য করতে আগ্রহী নতুন একটি গ্রুপ আমার ঈর্ষণীয় মর্যাদার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে তাদের নয়া প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করাতে চায়। এমন এক কনসালটেন্সী ফার্মের লোকজনই ভাড়াটে কোনো নারীর দ্বারা এমন প্রতারণামূলক ফাঁদ পেতে আমাকে সামাজিক ও ব্যবসায়িক ভাবে ধ্বংস করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে পত্রিকার প্রতিবেদককে তার হাতিয়াড় হিসেবে ব্যবহার করেছে মাত্র। তা না হলে এমন একপেশে ঢালাও অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশের নজির আমার জানা নেই।
মাননীয় সম্পাদক, আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আপনার সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতার আলোকে একটি বার পাঠ করার জন্য সবিনয়ে আবেদন জানাচ্ছি। আমার প্রতি কতোটা অবিচার করা হয়েছে তা আপনার বিবেকেই ফুটে উঠবে বলে আমি বিদগ্ধ পাঠক হিসেবে ধারনা করি। সেক্ষেত্রে এ মিথ্যা ভিত্তিহীন প্রতিবেদনের বিপরীতে আমার এই প্রতিবাদটি আপনার পত্রিকায় ছাপানোর জন্য প্রার্থনা জানাচ্ছি।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page