আজ [bangla_date], [english_date]

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে লাখো মুসল্লির জুমা

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে লাখো মুসল্লির জুমা

মীর আলাউদ্দিন : ব্যাপক উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলমের আ’ম (সার্বিক) বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার শূরায়ী নেজামের তিন দিনের প্রথম পর্ব। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিনে গতকাল অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের বৃহত্তম জুমার জামাত। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ মুসল্লি¬ ছাড়াও রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ এই বৃহত্তম জুমার জামাতে বিভিন্ন যানবাহন ও পায়ে হেঁটে শরিক হন। বিশ্বের ৫৫ দেশের প্রায় ২ হাজার ২শ’ প্রতিনিধিসহ লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমা অনুকুল আবহাওয়া ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকায় ইজতেমায় আগত মুসল্লিগণ স্বাচ্ছন্দে তাবলীগ জামাতের শীর্ষমুরুব্বিদের বয়ান শুনছেন এবং এবাদত বন্দেগীতে মশগুল রয়েছেন। আজ শনিবার ইজতেমার দ্বিতীয় দিন। কাল রোববার দুপুরের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। আখেরী মোনাজাত কাকরাইল জামে মসজিদের খতীব হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমদ পরিচালনা করার কথা রয়েছে। মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে পুনরায় ১৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৯ জানুয়ারি জোহরের পূর্বে কোন এক সময় আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তথা এবারের ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা। সকাল থেকেই সর্বস্তরের মুসলমানরা জুমার জামাতে শামিল হওয়ার জন্য টুপি, পাঞ্জাবী পরে জায়নামাজ হাতে ইজতেমা মাঠের দিকে ছুটতে দেখা গেছে। দেশ বিদেশের অগণিত মুসল্লি¬র সাথে একই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করার মাধ্যমে বেশি সাওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে সকলের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাকুলতা। যতই সময় গড়াতে থাকে ততই মুসল্লিদের ঢল আঁচড়ে পড়ে তুরাগের তীরে। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের সমাবেশ ঘটে জুমার জামাতে। টঙ্গী, উত্তরা, কামারপাড়া, মিরপুর, আবদুল্লাহপুরসহ আশপাশের এলাকার মসজিদে শুক্রবারের জুমার জামাতে মুসল্লি সংখ্যা ছিল খুবই কম। ইজতেমা মাঠে জুমার জামাত সুবিশাল প্যান্ডেলের গন্ডি ছাড়িয়ে বিস্তৃতি লাভ করে চারপাশে। জুমার জামাতে ইমামতি করেন কাকরাইল জামে মসজিদের খতিব ও বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বি হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমদ। বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দেশ-বিদেশ থেকে মুসল্লিদের টঙ্গী মুখি স্রোত অব্যাহত রয়েছে। বহুল কাঙ্খিত আখেরী মোনাজাত পর্যন্ত এ স্রোত আরো প্রবল হবে। তুরাগ তীরবর্তী বিশাল প্রান্তরে নির্মিত পাটের চট ও লাইলন কাপড়ের প্যান্ডেল ইতোমধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। গত দু’দিনে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়া এবং ময়দানে নতুন করে ফেলা বালিতে সমবেত মুসল্লিদের ভোগান্তি কিছুটা বেড়েছে। ধুলায় ধূসরিত গোটা ইজতেমা এলাকায় চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ওয়াসা এবং ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগে প্রধান প্রধান সড়ক ও বিদেশী মুসল্লিদের চলাচলের পথে পানি ছিটানো হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। একদিকে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে ওয়াসার গাড়ি অন্যদিকে মুহুর্তেই আবার ধুলায় ধূসর হচ্ছে রাস্তুাগুলো। ফলে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছে সর্দি, কাশি ও পেটের পীড়া নিয়ে শত শত মুসল্লি।
প্রথম দিনে যারা বয়ান করলেন : বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলমের আ’ম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। তাঁর বয়ান ভাষান্তর করেন স্বাগতিক বাংলাদেশের মাওলানা মো. আবদুল মতিন। বাদ জুমা বয়ান করেন সৌদি আরবের মুরুব্বি মাওলানা শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, বাদ আসর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা এহসান, বাদ মাগরিব বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আহমদ লাট।
প্রথম দিনের বয়ানে যা বলা হলো: বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলম ঈমান, আমল ও নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত বয়ান রাখেন। তাঁর বয়ানে তিনি বলেন, যারা দুনিয়াতে দ্বীনের উপর চলবে, ঈমানকে সুন্দর করবে, আমলকে সুন্দর করবে, আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে কামিয়াবী দান করবেন। তিনি আরও বলেন, ঈমান ও আমল ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াব হওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ঈমান আমলের পাশাপাশি নামাজকে সুন্দর করতে হবে। আল্লাহকে পেতে হলে নামাজ পড়েতে হবে। জাহান্নাম থেকে বাঁচতে এবং জান্নাত লাভের মাধ্যম হলো নামাজ। দিনে ৫ বার নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে কথা বলা হয়। যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুশু খুযুর সাথে আদায় করবে আল্লাহ তাকে নাজাত দিবেন। বয়ানে আরও বলা হয়, দুনিয়ার জিন্দেগী অনিশ্চিত জিন্দেগী, অক্ষম জিন্দেগী। দুনিয়ার জিন্দেগী হলো ধোকার জিন্দেগী। আর হাকিকতে বা বাস্তবতার দিক দিয়ে আসল জিন্দেগী হলো আখেরাতের জিন্দেগী। আখেরাতের জিন্দেগী হলো চিরস্থায়ী জিন্দেগী। অবশ্যই প্রত্যেক মানুষকে আখেরাতের জিন্দেগীতে যেতে হবে। প্রত্যেক মানুষকে দুনিয়ার জিন্দেগী ছেড়ে যেতে হবে। এতে কোন রকমের সন্দেহ নেই।
বয়ানের তাৎক্ষণিক অনুবাদ : বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের ১০-১৫জন শূরা সদস্য ও বুজর্গ বয়ান পেশ করছেন। মূল বয়ান উর্দূতে হলেও বাংলা, ইংরেজী, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসি ভাষায় তাৎক্ষনিক অনুবাদ করা হচ্ছে। বিদেশি মেহমানরা মূল বয়ান মঞ্চের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বপাশে হোগলা পাটিতে বসেন। বিভিন্ন ভাষাভাষীর মুসল্লিরা আলাদা আলাদা বসেন এবং তাদের মধ্যে একজন মুরব্বি মূল বয়ানকে তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শুনান।
জুমার নামাজে ভিআইপিদের অংশগ্রহণ : গতকাল শুক্রবারের জুমার নামাজে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপি, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, জেলা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ শরীক হন। ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে মহাসড়কে মুসল্লিদের অবস্থান: ইতোমধ্যে হাজার হাজার মুসল্লি ময়দানের বাহিরে অবস্থান নিয়েছেন এবং অনেকে জায়গা না পেয়ে বিভিন্নস্থানে বসার জায়গার ব্যবস্থা করছেন। যারা ময়দানের বাহিরে রয়েছেন তারা পানি, টয়লেট ও খাওয়া দাওয়াসহ বিভিন্নভাবে দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিভিন্ন জেলার কিশোর, যুবক, বয়োজ্যেষ্ঠ সব শ্রেণীর মানুষ ইজতেমা মাঠে আসা শুরু করেছেন। ধনী, দরিদ্র সবাই এখানে এক শামিয়ানার নিচে একসঙ্গে অবস্থান করছেন। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ ইস্তেমায়েী কাঁধে বহন করে মাঠে আসছেন। সিলেটের সুনামগঞ্জ ধর্মপাশা এলাকা থেকে ইজতেমায় আসা মুরব্বি মো. গিয়াস উদ্দিন (৭৬) বলেন, গত রাতে ১৮ জন মুসল্লি জামাতবদ্ধ হয়ে ইজতেমায় আসেন। ময়দানে ভেতরে জায়গা না পেয়ে বাটা সু কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বসে পরেন। মোনাজাত শেষে ইজতেমা স্থান ত্যাগ করবেন। ইজতেমা মাঠের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে তাঁরা কখনোই ভাবেন না। তাঁদের এখানে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ ও রাসুল (সা.) সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা। অর্জিত জ্ঞান দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার রাজি এহসান মাদ্রাসার ছাত্র মোতাসিম বিল্লাহ ৪০ জনের জামাত নিয়ে ময়দানের উদ্দেশ্যে এসে দেখে তাদের খিত্তায় অন্যান্য মুসল্লিরা অবস্থান নিয়েছেন। তাই সে তার সাথী ভাইদের নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়েছে। ময়মনসিংহ আসা এক মুসল্লি মরতুজ আলী বলেন, তারা ১১ জন জামাতবদ্ধ মুসল্লি ইজতেমায় যোগ দিতে আসেন। ময়দানের ভেতরে জায়গা না পাওয়ার কারণে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। এখানে পানি, টয়লেটের খুবই সমস্যা। এছাড়াও ময়দানের ভিতরে জায়গা না পেয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জামাতবদ্ধ মুসল্লিরা ময়দানের আশপাশে খোলা জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য খাস বয়ান, শিক্ষকদের জন্য খুসুসি বয়ান, বধিরদের জন্য বয়ান : গতকাল সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজের মিম্বার থেকে খাস বয়ান, শিক্ষকদের জন্য বয়ানের মিম্বার থেকে খুসুসি বয়ান ও বধিরদের জন্য পৃথক পৃথকভাবে বয়ান করা হয়। এছাড়াও শবগুজারি আমলের কামরায় খাওয়াজদের জন্য বিশেষ বয়ান পেশ করা হয়।
দুইদিনে ৪ মুসল্লির মৃত্যু : টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৩ মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের সকলেই বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যু বরন করেছেন। গতকাল শুক্রবার ভোরে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর থানার পাটাক গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে খোকা মিয়া ( ৬০), চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানা এলাকার কৈয়গ্রামের গুরা মিয়ার ছেলে মুহাম্মদ আলী (৭০) ও নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার পাইকরা বড়বাড়ি গ্রামের মৃত সোলাইমানের ছেলে শহীদুল ইসলাম (৫৫) নামে তিন মুসল্লির মারা গেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া থানার লাখিরপাড় গ্রামের মৃত হাসেম আলী শিকদারের ছেলে এয়াকুব শিকদার (৭৫) মারা যান।
হারানো ও প্রাপ্তি : ইজতেমা মাঠের পশ্চিম দিকে হারানো ও প্রাপ্তি সেন্টার খোলা হয়েছে। ময়দানে কেউ কিছু হারালে ও কিছু পাওয়া গেলে সেখান থেকে সঠিক তথ্য প্রদান করার কথা বলা হয়েছে।
হকার ও ভিক্ষুক উপদ্রব : বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা ও থানা থেকে টাকা রোজগারের উদ্দেশ্যে ময়দানের সবকটি প্রবেশপথ ও ফুটপাতে হকার এবং ভিক্ষুক ইজতেমা ভীড় জমিয়েছে। এদের জন্য ময়দানে আগত মুসল্লিদের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে।
মাসলেহাল জামাত কামরা : ইজতেমা ময়দানে আগত মুসল্লি¬দের নতুন যে কোন সমস্যা সমাধানকল্পে ময়দানের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে আশরাফ সেতুর পেছনে মাসলেহাল জামাতের কামরা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বসে ওই জামাতের মুরুব্বিরা উদ্বুত সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন।
মোবাইল চার্জ ২০ টাকা : ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের জন্য মোবাইল চার্জের একাধিক দোকান খোলা হয়েছে। সেখানে প্রতি ঘন্টা ২০ টাকায় চার্জ দেয়া যাচ্ছে। চার্জের দোকান মালিক আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে মুন্নু মাঠে মোবাইল চার্জের দোকান দিয়েছি।
নামাজের কাগজ প্রতি পাতা ১০ টাকা : শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লি যারা নামাজের জায়নামাজ সাথে আনেননি তারা প্রতি পাতা নামাজের কাগজ ১০ টাকা করে কিনে জায়নামাজ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। নামাজ শেষে ইজতেমা ময়দান ও রাস্তায় হাজার হাজার পত্রিকার পাতা ও নামাজ পড়ার কাগজ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
চিকিৎসা সেবা : টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মুসল্লি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ মুসল্লি ঠান্ডা, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেটের পীড়াজনিত কারণে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) আবাসিক চিকিৎসক ডা: মাসুদ রানা। এছাড়া ইজতেমাস্থলের পার্শ্ববর্তী ফ্রি-মেডিক্যাল ক্যাম্পগুলোতে কয়েক হাজার মুসল্লি বিনামূল্যে ওষুধ সংগ্রহ ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ১২শ’, হামর্দদ ল্যাবরেটরিজ প্রায় ২হাজার, ইবনে সিনা ৬শ’ রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন। এব্যাপারে টঙ্গী ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম. লতিফ বলেন, দু’পর্বেই আমাদের বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লিদের অংশগ্রহণ: ইজতেমার প্রথম পর্বে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, ওমান, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, কাতার, কানাডা, কম্বোডিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানী, ইরান, জাপান, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, দঃ আফ্রিকা, তাঞ্জানিয়া, রাশিয়া, জিম্বাবুয়ে, বেলজিয়াম, ক্যামারুন, চীন, কমোরস, ফিজী, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, কুয়েত, মরক্কো, কাতার, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইন, ইরিত্রিয়া, ভারত, দুবাইসহ বিশ্বের প্রায় ৫৫টি দেশের প্রায় ২ হাজার ২শ’ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন ভাষা-ভাষী ও মহাদেশ অনুসারে ইজতেমা ময়দানে বিদেশি মেহমানদের ভিন্ন ভিন্ন তাবু নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিদেশি নিবাসে দায়িত্বরত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শূরা ইস্তেকবালের এক মুরুব্বি।
এব্যাপারে ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা পালিত হচ্ছে। ময়দানে সমবেত দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি তাদের নিজ খিত্তায় অবস্থান নিয়ে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল রয়েছেন। আগামী ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     More News Of This Category

follow us on facebook page