আজ [bangla_date], [english_date]

ঢাকায় বিপুলসংখ্যক নকশাবহির্ভূত ভবন রাজউকের খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেই

বিধিমালা বহির্ভূত ভবনের বিরুদ্ধে অভিযানে রাজউক

মীর আলাউদ্দিন : রাজধানীতে ইমারত বিধিমালা বহির্ভূত অসংখ্য বহুতল ভবন গড়ে ওঠেছে। ওসব ভবনের বিরুদ্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সবগুলো জোনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে। ইতিপূর্বে গত বছরের মার্চে রাজধানীতে নিয়ম না মেনে গড়ে ওঠা সকল প্রকারের ভবনের তালিকা অনুযায়ী খুব শিগগিরই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আর এ অভিযান একটানা চলবে। একইসঙ্গে অভিযানে নিয়ম মানতে ওসব ভবনের বিরুদ্ধে রাজউকের দেয়া চিঠি প্রাপ্তির পরও কোনো প্রকার আইন মানার প্রবণতা লক্ষ্য করা না গেলে এবং ওই অভিযোগ গুরুতর প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে রাজউকের ভবন সিলগালা করে দেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। রাজউক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজউক থেকে ইতিপূর্বে অনুমোদিত নক্সার বাইরে যারা ভবন নির্মাণ করেছেন, ওসব ভবনের মালিককে কেন তার বিরুদ্ধ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ভবন মালিকরা তাতে তেমন কোনো সাড়া দেয়নি। ফলে ওসব ভবনের বিরুদ্ধে সংস্থাটি অভিযানে নামছে। বেশির ভাগ ভবন মালিকই রাজউকের চিঠিকে তেমন পাত্তাই দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে রাজউকের প্রতিটি জোনের পরিচালক দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন পদধারী রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। বলে রাজউক চেয়ারম্যান সাঈদ নূর আলম জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী ও পূর্ব ঘোষণা বাস্তবায়নেই এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, বিগত ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ রাজধানীতে অগ্নিনির্বাপণবিহীন ও অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা সকল বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে রাজউক অভিযান শুরু করে। যা একটানা পনেরো দিন পর্যন্ত পরিচালিত হয়। তবে জনবল সঙ্কট থাকায় ওই অভিযান থেমে যায়। প্রাথমিকভাবে রাজধানীতে ১৯৯৬ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে যেসব বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র সেসব ভবনের বিরুদ্ধই অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী নির্মিত সকল ভবনের বিরুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করা হয়। রাজধানীর বনানীর এফ আর (ফারুক-রূপায়ন) টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর রাজধানীর সকল বহুতল ভবন কতোটা নিরাপদ তা বের করতে অভিযান পরিচালনা করে মোট ১ হাজার ৮১৮ ভবনের অস্তিত্ব খুঁজে পায় রাজউক। মূলত ওসব ভবনের বিরুদ্ধেই অভিযানে নামছে রাজউক। সূত্র আরো জানায়, রাজউকের অভিযানে রাজধানীর সব বহুতল ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই করে ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করা হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি ভবনের রাজউকের নিয়মানুযায়ী কোনটার কি সুবিধা নেই তা বের করা হবে। বিশেষ করে ভবনগুলোর ফায়ার সেফটির কি অবস্থা ও রাজউক কর্তৃক চিঠি দেয়ার পরও কোনো প্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন বা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রতিপালনে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে ওসব নিয়ম না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে রাজউকের পরিদর্শন ও প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২৪টি পয়েন্ট ধরে পরীক্ষা করা ভবনগুলোর মধ্যে যেসব ভবনে ওসব নিয়ম মানা হয়নি, সেসব ভবনের বিরুদ্ধেই কেবল অভিযান পরিচালনা করা হবে। অভিযানে কেউ বাধা দিলে বা রাজউকের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করলে প্রয়োজনে জেল জরিমানা ও শাস্তি প্রদান করবে মোবাইল কোর্ট। আবার যারা চিঠি প্রাপ্তির পর নিয়ম মেনে ভবনের সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে রাজউকের চেয়ারম্যান সাঈদ নূর আলম জানান, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মাণ করা ভবন মালিকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে ভবন মালিকরা তাতে তেমন সাড়া দেয়নি। রাজউকের দেয়া চিঠি প্রাপ্তির পরও কোন প্রকার আইন মানার প্রবণতা লক্ষ্য করা না যাওয়ায় রাজউক কঠোর হতে বাধ্য হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক অভিযোগ গুরুতর প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে ভবনটি সিলগালা করে দেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। মূলত কোন অবৈধ ভবনকেই ছাড় দেয়া হবে না। সকলকেই নিয়ম মানতে বাধ্য করা হবে।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page

error: sorry please