আজ [bangla_date], [english_date]

প্রতীকি ছবি

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়নের দুই দশক পর মনিটরিং সেল

নিজস্ব প্রতিনিধি : নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়নের দুই দশক পর উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনার আলোকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলার বিচার বিলম্বে দায়ীদের চিহ্নিতে গঠন করা হয়েছে মনিটরিং সেল। সেল গঠনের বিষয়টি প্রতিবেদন দিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ডিভিশন বেঞ্চকে গতকাল বুধবার অবহিত করে রাষ্ট্রপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে সভাপতি করে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব বা তার প্রতিনিধিকে (অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার নিচে নয়) সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে এই সেল গঠন করা হয়।নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয় ২০০০ সালে। পরে আইনটিকে আরো কার্যকরের লক্ষ্যে কয়েক দফা সংশোধনীও আনা হয়। ঐ আইনের ৩১(ক) ধারায় বলা হয়েছে, মামলা প্রাপ্তির তারিখ হতে ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে ট্রাইব্যুনালকে (বিচারক) তার কারণ লিপিবদ্ধ করে একটি প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নিকট দাখিল করতে হবে। অনুরূপ ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকেও এর কারণ লিপিবদ্ধ করে একটি প্রতিবেদন ঐ সময়ের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ করতে হবে। বিচারক, পিপি ও তদন্ত কর্মকর্তার ঐ প্রতিবেদনসমূহ পর্যালোচনার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে সরকার ও সুপ্রিম কোর্ট যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এদিকে পুলিশের আইজিপির পক্ষ থেকে গত পাঁচ বছরের দেশের সকল থানায় দায়েরকৃত ২৬ হাজার ৬৯৫টি ধর্ষণ মামলার পরিসংখ্যান হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩৩১টি, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৬৮৩টি, ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৬৯৫টি, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৭৬৬টি ও ২০২০ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৬ হাজার ২২০টি মামলা দায়ের করা হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের আদালতসমূহে কী পরিমাণ মামলা দায়ের হয়েছে তার একটি তালিকা দাখিলের জন্য দুই মাস সময় দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, সালিশের মাধ্যমে বা অর্থের বিনিময়ে ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ের ঘটনা আইন বহির্ভূত। এ ধরনের ঘটনা রোধে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

আইনের এই বিধান কার্যকরের জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে মিলাদ হোসেন বনাম রাষ্ট্র মামলায় রায় দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। ২০১৬ সালের দেওয়া ঐ রায়ের নির্দেশনার আলোকে চলতি বছরে গঠন করা হলো মনিটরিং সেল। এখন ঐ সেলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও আইন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার নিচে নন একজন কর্মকর্তা। সভাপতি করা হয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরকে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২১ অক্টোবর ধর্ষণের ঘটনায় অর্থের বিনিময়ে বা অন্য কারণে সালিশে মীমাংসা করার উদ্যোগ প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। এছাড়া ধর্ষণ মামলার বিচারের সময়সীমা পালনে ইতিপূর্বে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ ও রায় বাস্তবায়নের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এ আদেশ অনুসারে পুলিশের আইজিপি ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে দুটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page