আজ [bangla_date], [english_date]

টাকার মান কমেছে ৭ টাকা

নিজস্ব প্রতিনিধি : দেশে মার্কিন ডলারের দাম ফের বেড়েছে। তাতে টাকার মান আবারও কমেছে। মঙ্গলবার (২৮ জুন) ব্যাংকগুলোর নিকট ৯৩.৪৫ টাকায় ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার ডলারের দাম ছিল ৯২.৯৫ টাকা। একদিনের ব্যবধানে টাকার মান কমলো ০.৫০ টাকা। দুই মাসের ব্যবধানে ১২ দফা বাড়ানো হয়েছে ডলারের দাম। আলোচ্য সময়ে টাকার মান কমেছে ৭ টাকা। এর আগে, গত ২৯ মে দেশে ডলারের এক রেট ৮৯ টাকা বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু পরবর্তীতে এই রেট উঠিয়ে দিয়ে ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর ৯ বার বাড়লো ডলারের দাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার প্রতি ডলার ৯৩.৪৫ টাকা দরে ব্যাংকগুলোর নিকট ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হবে ৯৩.৪৫ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।

এদিকে, গত মাসে ডলারের দাম বেড়ে খোলা বাজারে ১০২ টাকা অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছিল। পরে কিছুটা কমে বর্তমানে খোলা বাজারে ৯৮ থেকে ৯৯ টাকায় ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। ডলারের দাম পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু’এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ডলারের দাম ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এদিকে, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কেনাবেচা হয়েছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। যা ৯ জানুয়ারি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ টাকা। গত ২৩ মার্চ তা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় বেচাকেনা হয়।

গত ২৭ এপ্রিল ডলার প্রতি ২৫ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত ১০ মে ডলার প্রতি আরও ২৫ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত ১৬ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কেনাবেচা ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর ২৩ মে ফের ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করে। এরপরও বাজার স্থিতিশীল হয়নি। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা।

যদিও ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু তাতেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ডলারের এক রেট উঠিয়ে দিয়ে গত ২ জুন আরও ৯০ পয়সা বাড়িয়ে দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গত ৬ জুন প্রতি ডলার ৯১ টাকা ৫০ পয়সা। গত ৭ জুন ডলার ৯১.৯৫, ৮ জুন ৯২ এবং গত ১৩ জুন ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৯২.৫০ টাকা। গত ১৫ জুন ডলার দাম ছিল ৯২.৮০ টাকা। গত ২১ জুন ডলারের দাম বেড়ে ৯২.৯০ টাকা, পরের  দিন তা বেড়ে ৯২.৯৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। ২৮ জুন ডলারের দাম বেড়ে ৯৩.৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। যা ডলারের দামের সর্বোচ্চ রেকর্ড। নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংক তার মূলধনের ১৫ শতাংশের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রতিষ্ঠানের কাছে রাখতে পারে। এর অতিরিক্ত হলেই ব্যাংকটিকে বাজারে ডলার বিক্রি করতে হয়।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page