আজ [bangla_date], [english_date]

কখনো কি প্রাণ ছিল মঙ্গলে

অনলাইন ডেস্ক: মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশীর পৃষ্ঠে কখনো কি প্রাণের অস্তিত্ব ছিল? এটি এমন একটি প্রশ্ন, যার উত্তর বহু শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানীরা খুঁজছেন। এ নিয়ে বহু বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি রচিত হয়েছে।বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ৪০০ কোটি বছর আগে দুটি গ্রহেই জীবন প্রতিপালনের সম্ভাবনা লক্ষ করা যায়। তবে মঙ্গলের মধ্যবর্তী ইতিহাস প্রহেলিকাময়।বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মঙ্গলের রহস্য ভেদ করতে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীন এই গ্রীষ্মে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করছে। অবশ্য মঙ্গলে প্রাণের অনুসন্ধান করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে না তারা। কারণ, সেখানে এখন কিছুই টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই। তবে অতীতের জীবনরূপের সম্ভাব্য যদি কোনো চিহ্ন সেখানে পাওয়া যায়, সেটাই অনুসন্ধান করা হবে।এই বিশাল ও ব্যয়বহুল প্রোগ্রামগুলো বৃথা প্রমাণ করতে পারে। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, অন্যান্য গ্রহে জীবনের সম্ভাবনা খুঁজে পেতে লাল গ্রহটি নিয়ে এখনো আমাদের অনেক আশা।চলতি সপ্তাহে ফ্রান্স মহাকাশ সংস্থা সিনেসের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ভেস লা গল বলেন, ‘ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীর সন্ধান করতে হলে এখনো মঙ্গলই আদর্শ জায়গা। কারণ, এটি কয়েক শ কোটি বছর আগে বাসযোগ্য ছিল।যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার ২০২০ সালে মঙ্গল পর্যবেক্ষণ অভিযান জুলাই মাসের শেষ দিকে শুরু হচ্ছে। ওই সময় মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবী দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করবে। ২৫০ কোটি ডলার খরচ করে সবচেয়ে আধুনিক কারিগরি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মঙ্গলের রহস্য উন্মোচনের এটাই বৃহত্তম প্রচেষ্টা। তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়; মহাকাশ অভিযান নিয়ে আগ্রহ আবার বাড়তে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে।সপ্তদশ শতকে মঙ্গল নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ শুরু হয়। ১৬০৯ সালে ইতালির বিজ্ঞানী গ্যালিলিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মঙ্গল পর্যবেক্ষণ করেন, যা জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার হিসেবে গণ্য করা হয়। এর ৫০ বছর পর ডাচ্‌ বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান হিউজেনস আরও উন্নত টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মঙ্গলের টপোলজিক্যাল নকশা আঁকেন।এ শতকের ষাটের দশকে এসে বিজ্ঞানীরা বলেন, মঙ্গল গ্রহ প্রাণ ধারণের অনুপযোগী। গবেষকেদের ধারণা সত্যি হয়, যখন সেখানে ভাইকিং ল্যান্ডারস মঙ্গলের মাটি পরীক্ষা করতে সক্ষম হয়। মঙ্গল নিয়ে আগ্রহ ২০ বছরের জন্য শেষ হয়ে যায়। ২০১১ সালে এসে বিজ্ঞানীরা মঙ্গলের পানি থাকার প্রমাণ পান।পানি পাওয়ার পর থেকেই মঙ্গল ঘিরে আবার আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। ফ্রান্সের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানী মাইকেল ভিসো বলেন, পানির সন্ধান পাওয়ার পর থেকে প্রতিটি অভিযানেই মঙ্গল যে একেবারে মৃত নয়, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ‘প্রিজারভেন্স’ নামের নতুন যে মার্কিন নভোযান মঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে যাচ্ছে, তা ছয় মাসের যাত্রা শেষে ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলে অবতরণ করবে। এটি মঙ্গলে জেজেরো ক্রেটার নামে একটি অঞ্চলে নামবে, যা ৪৫ কিলোমিটার নদীর বদ্বীপ। সেখানে পৃথিবীর মতো পলল শিলা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা আগামী এক দশক ধরে মঙ্গলে প্রাণের অনুসন্ধান করবেন।মঙ্গলে যদি প্রাণের অস্তিত্ব না মেলে, তবে তাঁরা চোখ রাখবেন শনি ও বৃহস্পতিবার চাঁদের দিকে। তবে সেখানে পৌঁছানোর বিষয়টি এখনো বাস্তবতার চেয়ে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিতেই রয়ে গেছে।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page