আজ [bangla_date], [english_date]

আড়াই হাজার খুটা জেলে পরিবার বেকার

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : কুয়াকাটায় অন্তত আড়াই হাজার খুটা জেলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এসব পরিবারে এখন চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। সাগরের অগভীর এলাকায় এসব জেলে ইলিশের জাল পেতে মাছ শিকার করত। এ কারণে সবাইকে খুটা জেলে বলা হয়। করোনার কারণে এসব জেলেরা এখন বেকার হয়ে আছেন। সরকারিভাবে যদিও কুয়াকাটা পৌরএলাকার ৫৩০ জেলে পরিবারকে বিশেষ ভিজিএফএর চাল দেয়া হয়েছে। কিন্তু যার অধিকাংশ এসব জেলেদের ভাগ্যে জোটেনি। জোটেনি এ ছাড়া অন্য কোন খাদ্য সহায়তা। কারণ এদের অধিকাংশের জেলে কার্ড নেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটার দীর্ঘ এলাকায় সৈকতপাড়ে মাছ ধরার নৌকাগুলো কাত করে রাখা হয়েছে। কর্মহীন মানুষগুলো বিমর্ষমুখে জানান, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অর্ধহার-অনাহারে দিন কাটছে। এখন আর পারছেন না। কুয়াকাটা ঝাউবাগান এলাকার বাসীন্দা জাফর মাঝি জানান, দুই ভাই-স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ছয় জনের সংসারে এখন আর খাবারের যোগান নেই। ধারদেনা করেছেন ১২ হাজার টাকা। ডাল-আলুভর্তা দিয়ে চালাচ্ছেন একেকটি বেলা। মাছের সঙ্গে বসবাস করা মানুষগুলোর খাবারে জোটছে না মাছ। জাফর জানালেন, দু’টো নৌকা তাঁদের। নয় জন জেলে মাছ শিকার করেন। করোনার কারণে এখন নয়টি পরিবারের সবাই বেকার। যেখানে একয়দিনে ৫০ হাজার টাকা আয় হওয়ার কথা। সেখানে উল্টো ধার-দেনায় কাহিল। করোনায় ঘরবন্দী হওয়া এসব পরিবারের এখন প্রয়োজন খাদ্য কিংবা আর্থিক সহায়তা। পাঞ্জুপাড়া সংলগ্ন বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাস সোহেল মাঝির। জানালেন, সাতটি বছর খুটা জেলের কাজ করছেন। ভাই, ছেলে স্ত্রীসহ সবাই বেকার ঘরে আছেন। মৌসুমের মাছ ধরার প্রস্তুতি বাবদ ৫০ হাজার টাকার পুঁজি নৌকাণ্ডজালের জন্য সংগ্রহ করেছিলেন। ওই টাকা খরচ করে চলছেন। তার ভাষায়,‘চালান ভাইঙ্গা খাই।’ সোহেল জানান, কুয়াকাটার খাজুরা থেকে খুটা জালের ৮/৯টি ঘাট রয়েছে। প্রত্যেক ঘাটে দেড়-দুই শ’ জেলে নৌকা রয়েছে। একেকটি নৌকায় ৪/৫ জন জেলে কাজ করে। এখন সবাই বেকার। প্রত্যেকের হাড়ি জ্বলছে ধার-দেনায়। এখন তাও মিলছেনা। এভাবে কমপক্ষে আড়াই হাজার পরিবারে চরম দুরাবস্থা চলছে। করোনার কারণে ঘরবন্দী হওয়া খুটা জেলেরা এখন তাদের জন্য আলাদা খাদ্য সহায়তা দেয়ার দাবি করেছেন। অথচ একয়দিনে এসব খুটা জেলে কোটি টাকার ইলিশ ধরে দেশের অর্থনীতিতে যোগান দিতে পারতেন। পারতেন নিজেদের সংসারের যোগান দিতে। এখন সবাই চরম অসহায় হয়ে আছেন। বিশেষ সহায়তা দিয়ে এসব পরিবারের খাদ্যাভাব পুরন করা প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, চেষ্টা চলছে এসব পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page

error: sorry please