আজ [bangla_date], [english_date]

আলাদা বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে

নিজেস্ব প্রতিনিধি : নদীর দখল-দূষণ রোধে আলাদা বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী জিআরপির মতো নদী রক্ষায় ফোরশোর গার্ড ফোর্স গঠন করা হবে। নদীর দূষণ ও তীরভূমি অবৈধ দখল রোধে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে ওই বাহিনী কাজ করবে। ফোরশোর গার্ড ফোর্স গড়ে তোলার আগে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ইতিমধ্যে রিভার গার্ড গঠন করা হয়েছে। অবৈধ দখল-দূষণ রোধে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নদী রক্ষায় পরীক্ষামূলকভাবে রিভার গার্ড চালু করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সারাদেশের নদী রক্ষার মাস্টারপ্ল্যানের পাশাপাশি দেশের ৬৪ জেলার ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনর্দখল প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৩৭৫ উপজেলা ও দুটি সিটি কর্পোরেশনে ৫৬১টি প্যাকেজের আওতায় প্রায় ৪০৮৬ দশমিক ৬২২ কিলোমিটার দীর্ঘ ৮৮টি ছোট নদী, ৩৫২টি খাল এবং ৮টি জলাভূমি পুনরায় খনন করা হবে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য হলো ৫ দশমিক ২০ লাখ হেক্টর এলাকার জলাবদ্ধতা সরিয়ে বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন থেকে রক্ষা করা, ১ দশমিক ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে সেচের মাধ্যমে ৩ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, ১৫ হাজার জেলের মাছ চাষ, ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে জৈববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ৩ দশমিক ৬৫ লাখ হেক্টর জমির বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ৪ হাজার ১০০ কিলোমিটার রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং এক হাজার ৮০০ কিলোমিটার নৌপথ দিয়ে নদী যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ করা। অবৈধ দখল থেকে নদী উদ্ধারে সরকার খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। সরকার যেহেতু নৌপথের মাধ্যমে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ওপর জোর দিচ্ছে, তাই দেশজুড়ে ছোট এবং বড় নদীগুলোর নাব্যতা বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। গত বছর থেকে ঢাকার চারপাশে নদীর দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে অভিযান চালনো হয়। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৭৪টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ এবং অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে ৫৯৩ দশমিক ১২ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। গত বছর তিন দফায় বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী তীরে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এবার নদী উচ্ছেদের পাশাপাশি সারাদেশের খালগুলো উদ্ধারে একযোগে অভিযান শুরু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি ছোট নদী ও খালগুলোতে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বজায় রাখা সম্ভব হবে। সূত্র আরো জানায়, প্রাথমিকভাবে নদী রক্ষা বাহিনী নদীর তীর এলাকায় যাতে পুনরায় দখল না হতে পারে তা দেখভাল করবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থা হিসেবে এই বাহিনী পরীক্ষামূলক হিসেবে গঠন করা হয়েছে। নদী রক্ষায় প্রাথমিক এই প্রকল্পের সফলতা পাওয়া গেলে আগামীতে ফোরশোর গার্ড ফোর্স গঠন করা হবে। যাতে দেশের সব নদীর ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে গঠিত ইউনিটটি আপাতত বন্দরে নিয়োজিত আনসারদের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে। দখল-দূষণ রোধে নিবিড় পর্যবেক্ষণসহ আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে তাদের একটি অংশ নদীর উপরিভাগে সড়কপথে বিশেষ টহল গাড়িতে এবং একটি অংশ নৌপথে স্পিডবোটে করে দিন-রাতে নিয়মিত টহল দেবে। পাইলট প্রোগ্রামটি সফল হলে এ ইউনিটটির পরিসর বাড়িয়ে রেলওয়ের জিআরপির মতো বিআইডব্লিউটিএ’র অধীনে নিজস্ব একটি ফোরশোর গার্ড ফোর্স (এফজিএফ) গঠন করে নদীর দূষণ ও তীরভূমি অবৈধ দখল রোধে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম-পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে ১২ সদস্যের একটি রিভার গার্ড গঠন করে সীমিত পরিসরে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মূলত ঢাকার চারপাশের নদী দূষণ ও তীরভূমি পুনর্দখল রোধে নিবিড় পাহারা জোরদার ও টেকসই মনিটরিং (পরিবীক্ষণ) ব্যবস্থা চালু করতেই পরীক্ষামূলকভাবে পাইলট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ‘রিভার গার্ড’ ইউনিটটি চালু করা হয়।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page