আজ [bangla_date], [english_date]

আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল

মীর আলাউদ্দিন :   চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল। বর্তমানে ওই পাটকলগুলোর দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি ৩২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি, বেতন, পিএফ, গ্র্যাচুইটি, পাট ক্রয়ের দেনা এবং ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে দেনায় জর্জরিত পাটকলগুলো। দেনার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। যদিও পাটকলগুলোতে বর্তমানে ২৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার পাটপণ্য মজুত রয়েছে। তবে আর্থিক সঙ্কটে থাকা পাটকলগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বিজেএমসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলীম, ইস্টার্ন, জেজে আই ও কার্পেটিং জুট মিলের বেতন বাবদ ১৪ কোটি ২৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা, মজুরি বাবদ ৪৮ কোটি ১৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, পিএফ বাবদ ৯২ কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, গ্র্যাচুইটি বাবদ ২৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, পাট ক্রয়ের দেনা বাবদ ১৭৩ কোটি ৭০ লাখ ৫ হাজার টাকা, ব্যাংকের দেনা ৫৬২ কোটি ১৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৬৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেনা রয়েছে। সব মিলিয়ে মিলগুলোর দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি ৩২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। আর ওই পাটকলগুলোতে বর্তমানে উৎপাদিত মজুদ পণ্য রয়েছে ৩০ হাজার ২০৭ টন। যার আনুমানিক মূল্য ২৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ার কারণে মিলগুলো চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়মিত মজুরি ও বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন বাবদ বকেয়া রয়েছে ৪৪ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। সূত্র জানায়, বকেয়া মজুরি প্রদান ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে পাটকল শ্রমিকরা রাজপথে নেমেছে। তবে সারাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি ও বেতন বাবদ ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। আর গত ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের ৪৪ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে। গত বুধবার থেকে শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের বকেয়া পাওনা পেতে শুরু করেছে। এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর শ্রমিক ইউনিয়ন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাটকলগুলো আর্থিক সঙ্কটে থাকায় শ্রমিকরা কাজ করেও নিয়মিত মজুরি পাচ্ছে না। তবে এখন সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা থেকে প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহের মজুরি প্রদান করা হচ্ছে। যা শ্রমিকরা পেতে শুরু করেছে। তবে ১১ দফা দাবি আদায়ে শ্রতিকদেও কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে আমরণ গণঅনশন চলবে। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) খুলনা অঞ্চলের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা মো. বনিজ উদ্দিন মিয়া জানান, খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলোর সার্বিক তথ্য বিজেএসসিতে প্রেরণ করা হয়েছে। পাওনা সাপেক্ষ পর্যায়ক্রমে দেনা পরিশোধ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     More News Of This Category

follow us on facebook page