আজ [bangla_date], [english_date]

আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন ভারতের যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক :  আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচার অভিযান চালাচ্ছেন ভারতের যুবক সঞ্জয় বিশ্বাস (৩৫), তিনি পূর্বপুরুষের টানে ভারতের কোলকাতা থেকে বাইসাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় এসেছেন।
গত ৩ দিন ধরে তিনি আত্মহত্যা প্রতিরোধে কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে সঞ্জয় বিশ্বাস আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রচারাভিযান শুরু করেন। এর আগে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সঞ্জয় বিশ্বাস আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এখান থেকে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি সাইক্লিং শুরু করেন। এরপরই শুরু হয় তার আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রচারাভিযান।

কোলকাতার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারাভিযান চালানোর পরে তিনি ভারতের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, টাইগারহিল, দার্জিলিং, আসাম, মেঘালয়, বিহার, উত্তর প্রদেশ, হারিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লিাতে প্রচারাভিযান চালিয়েছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার চিতশী গ্রামে সঞ্জয় বিশ্বাসের আদি পৈত্রিক ভিটা রয়েছে। ৪৭ এর দেশ ভাগের পর তার দাদা ভারত চলে যায়। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগোনা জেলার গাইঘাটা থানার গুটরি গ্রামে তার পূর্বপুরুষ বসতি স্থাপন করেন। সেখানেই এখন তাদের নিবাস। তার পিতার নাম সুমন্ত বিশ্বাস। আজ বৃহস্পতিবার কোটালীপাড়া উপজেলা সদরে সঞ্জয় বিশ্বাস স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

সঞ্জয় বিশ্বাস গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বাইসাইকেল চালিয়ে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে আমি বাংলাদেশে এসেছি। বাংলাদেশে এসে যশোর, মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর, রাজবাড়ী সহ কয়েকটি জেলায় আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রচারাভিযান চালিয়েছি। এরপর গত সোমবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এসেছি। সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাবড়া শ্রী চৈতন্য কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করি। এরার উত্তর প্রদেশের আমেথিতে ফাস্টফুডের ব্যবসা শুরু করি। করোনার প্রভাবে আমরা এই ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এরপর হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছিলাম।

ওই যুবক বলেন, আত্মহত্যা কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারে না। আত্মহত্যা করার পরে আপনজন যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই আমি এই আত্মহত্যার প্রবনতা থেকে সকল নর-নারীকে রক্ষায় প্রচারাভিযানে নেমেছি। আমি বাংলাদেশে এসে কয়েকটি জেলায় ঘুরেছি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারাভিযান চালিয়েছি। আমি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রচারাভিযান চালাতে চাই। হতাশাগ্রস্তদের আত্মহত্যার পথ থেকে ফেরাতে চাই। কারণ আত্মহত্যার মত অস্বভাবিক মৃত্যু পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র প্রত্যাশা করে না।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, সঞ্জয় বিশ্বাস কোটালীপাড়ায় এসে আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন। তিনি তার সকল কাগজপত্র আমাকে দেখিয়েছেন। তিনি বৈধ পথেই বাংলাদেশে এসেছেন। ইত্যেমধ্যে তিনি উপজেলার রামশীল কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আত্মহত্যার প্রতিরোধে প্রচারাভিযান চালিয়েছেন। তিনি যদি এ উপজেলায় আরো কিছুদিন থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রচারাভিযান চালান তাহলে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page