জিয়ারুল ইসলাম : কুমিল্লা মুরাদনগর জাহাপুর ইউনিয়নের বির্তকিত বুলেট বাবু মেম্বারের কর্মকান্ডে অনেক আগে থেকেই বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতে রয়েছে ওই এলাকাবাসী। ধুরন্ধর ওই মেম্বার জাহাপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও জাহাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত বাবু ওরফে বুলেট বাবু। ইয়াসিন আরাফাত বাবু কখনো কখনো গাজা ছিনিয়ে নেবার অভিযোগে অভিযুক্ত কখনো বা প্রতারণার মাধ্যমে কারো টাকা আৎসাতে লিপ্ত হবার অভিযোগে অভিযুক্ত। এবার তার বিরুদ্ধে রাজধানী মিরপুর পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডাইরী হয়েছে। জানা যায় বুলেট বাবুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোক্তার হোসেন ওরফে মাইয়া মুক্তারের স্ত্রী এ জিডিটি করেছেনে। জিডিতে উল্লেখ রয়েছে মুক্তারের স্ত্রী সম্পা আক্তার তাকে তার স্বামীর সাথে চলাফেরা করতে নিষেধ করায় ক্ষিপ্ত হন বুলেট বাবু। আর তাতেও নানা ধরনের হুমকি দেন বাবু। সম্পা নামের ওই নারী জানান বাবু আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে খারাপ পথে পরিচালিত করে তাই তাকে নিষেধ করেছিলাম যেন আমার স্বামীর সাথে না চলে। তিনি আরো জানান, বাবুর কারণেই তার সংসারে নানা ধরনের অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। জিডিতে উল্লেখ রয়েছে বুলেট বাবু মোক্তার স্ত্রী সম্পার ব্যবহ্নত নাম্বারে হোটসএ্যাপে লিখেছেন ”তুমি আর কয়েক দিন দুর ব্যবহার করে নাও সময় আছে তারপর আমারটা দেখামু, ২০০৮ সালে জেল খেটেছি, নিজেরে হেডাম ভাবেন মীরপুরে এসে আপনার সাথে দেখা হবে, ঢাকার শহরে কার কতটুকু হেডাম আছে সামনা সামনি প্রমাণ করবো না পারলে ক্ষমা চেয়ে আসবো। ইয়াসিন আরাফাত বাবু উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং জাহাপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।
তিতাস উপজেলার কলাচাঁনকান্দি গ্রামের আবদুল বারেক মিয়ার মেয়ে নাছিমা বেগমের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে তার টাকা হাতিয়ে নেন এবং টাকা তো ফেরত দেন নি উল্টো ওই নারীকে হুমকি ধামকি দেবার অভিযোগ রয়েছে। ওই নারী ইয়াসিন আরাফাত বাবুকে অভিযুক্ত করে মুরাদনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। অভিযোগ দাখিলের পর পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে এসে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পান। প্রতারণার শিকার ওই নারীর মাধ্যমে জানা যায়, তার স্বামী মুরাদনগর উপজেলার বাখরাবাদ এলাকার শহীদ মিয়ার সাথে তার স্বামীর সঙ্গে তার জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ব থেকে বিরোধ চলছিল। তাদের না জানিয়ে তার বৃদ্ধ বাবার কাছ থেকে তার স্বামী জোরপূর্বক ৪২ শতাংশ জমি দানপত্র দলিল করে নেয়। পরে তিনি জানতে পেরে ওই জমি উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে জাহাপুর গ্রামের স্থানীয় যুবলীগ নেতা ইয়াসিন আরাফাত বাবুর শরণাপন্ন হলে বাবু তার জমি উদ্ধার করে দেবে বলে দুই দফায় ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা নেয়।
আরো পড়ুন : ভয়ঙ্কর অপরাধী যখন জনপ্রতিনিধি
কিন্তু মাসের পর মাস অতিবাহিত হলেও সে আমার জমি উদ্ধার দূরের কথা, টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন গালমন্দ ও টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করে। এছাড়াও ইয়াসিন আরাফাত বাবুর বিরুদ্ধে গাঁজার গাড়ি আটকিয়ে গাঁজা ভাগাভাগি করার অভিযোগও রয়েছে। জানাযায় গাঁজার গাড়ি আটকিয়ে ২০ কেজি গাঁজার মধ্যে ১২ কেজি গাঁজা বাবুসহ দুই যুবলীগ নেতা ও কতিথ এক সাংবাদিকের মধ্যে ভাগাভাগি হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। অবশিষ্ট ৮ কেজি গাঁজা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল সেই এলাকার পুলিশ। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের নহল চৌমুহনী নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটেছিল। গাঁজা ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠা কতিথ সাংবাদিক ও যুবলীগ নেতাদের থানায় ডেকে এনে রাতে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছিল পুলিশ। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গা ছাড়া ভাব দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বেশ নানা প্রশ্ন উঠেছিল। গত ১৪ এপ্রিল বুধবার রাত আনুমানিক ৮টায় গাইটুলি গ্রামের মৃত ফজলুর রহমান ভুইয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন (৪০) সিএনজি চালিত অটো রিকসায় করে কসবা থেকে গাঁজা নিয়ে আসছেন, এমন খবর পেয়ে নহল গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে কবির মিয়া (৩২) ও গাইটুলি গ্রামের মতিন মিয়ার ছেলে বুলেট বাবু (২৪) নহল চৌমুহনী নামক স্থানে তার গাঁজা ধরার জন্য ওত পেতে থাকেন। গাঁজার গাড়ী আসা মাত্রই ব্যারিকেট দেয় তারা।
আরো পড়ুন : বাংলা মদ বিক্রেতা আব্বাস এখন কোটিপতি আওয়ামী নেতা
গাড়িতে থাকা ফারুক ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে আশ-পাশের লোকজন জড়ো হয়। পরে সাধারণ মানুষ এসে দেখেন পেক্ষাপট ভিন্ন, তাই তোপের মুখে গাঁজা ফেলে দিয়ে সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায় ফারুক। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নহল গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে ও ধামঘর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি রাব্বি (২৫), গাইটুলি গ্রামের মুকবল হোসেনের ছেলে ও যুবলীগ কর্মী সোহেল মিয়া (২৯), জাহাপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বাবু (২৮) ও আবুল কাশেমের ছেলে কতিথ সাংবাদিক রাহাত হোসেন (৩৫) সহ অন্যান্যরা। তখন রাহাত ফারুকের পক্ষ হয়ে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে গাঁজা দিয়ে দেওয়ার সমঝোতার প্রস্তাব দেয় কবির ও বাবুকে। এ প্রস্তাব প্রত্যাখান করে জোর খাটিয়ে ১২ কেজি গাঁজা নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন রাহাত হোসেন, মোর্শেদ কামাল রাব্বি, ইয়াছিন আরাফাত বাবু ও সোহেল মিয়া। ঘটনার সংবাদ পেয়ে অবশিষ্ট ৮ কেজি গাঁজা থানায় নিয়ে যায় এএসআই আবু হানিফ। এ ঘটনায় পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, বুলেট বাবু ও কবিরের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি হলেও গাঁজা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠা যুবলীগ নেতা মোর্শেদ কামাল রাব্বি, ইয়াছিন আরাফাত বাবু, সোহেল মিয়া ও কতিথ সাংবাদিক রাহাত হোসেনকে থানায় ডেকে এনে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয় পুলিশ। গাঁজা ব্যবসায়ী ফারুক জানিয়ে ছিলেন তার সিএনজিতে ২০ কেজি গাঁজা ছিল যা কবির, বুলেট বাবু ও অন্যান্যরা আমার এ গাঁজা ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছে। যদিও বুলেট বাবু গাঁজা ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করেন।