নিজেস্ব প্রতিনিধি : করোনা প্রাদুর্ভাবের ক্ষতি পোষাতে নতুন বাজেটে ভ্যাটের আওতা বাড়ানো হচ্ছে না। কারণ প্রভাবে দেশব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের বরং কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত বার্ষিক বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স আদায় করা হয়। বাজেটে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ছোটো ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য তা কিছুটা স্বস্তিদায়ক হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আমদানি পর্যায়ে আগাম কর (অ্যাডভান্স ট্যাক্স বা এটি) নামে গত বছর থেকে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। এবার ওই খাতে দুটি স্তর হতে পারে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ৫ শতাংশ ঠিক রেখে শিল্পের আমদানির ক্ষেত্রে ওই হার কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হতে পারে। তাছাড়া চিকিৎসা কাজে ব্যবহার হওয়া, বিশেষ করে করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে মাস্কসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী আমদানি ও উৎপাদনে বেশ কিছু খাতে ভ্যাট ও শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হতে পারে। তবে তামাকপণ্যের ওপর এবারও কর বাড়ানো হচ্ছে। সিগারেটের মধ্যম ও নিম্নস্তরে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশের মতো বাড়তে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ছাড় দেয়া ভ্যাটের অর্থ এ খাত থেকে পুষিয়ে নিতে চায়। সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল করোনা ভাইরাসের বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্থবির। দেশেও স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানিও ব্যাপকভাবে কমে গেছে। সরকারও এ বছর হাতেগোনা দু’একটি খাত বাদে ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য চাপ দিতে চাইছে না। বরং ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের স্বস্তি দেয়ার উপায় খোঁজা হচ্ছে। যে কারণে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার পাশাপাশি বিদ্যমান ভ্যাট আইনের কিছু জটিলতা নিরসনেরও প্রস্তাব থাকবে। সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে উৎসে কর ও রেয়াত নেয়াসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে। ওই কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাজেটে এমন ধরনের ১০ থেকে ১২টি ক্ষেত্রে আইনি সংস্কার করার প্রস্তাব করা হবে। মূলত এবার ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে আইনি সংস্কারের মাধ্যমে ভ্যাটের অসঙ্গতি ও জটিলতা দূর করার মাধ্যমে ভ্যাট আদায় ব্যবস্থাকে সহজ করার লক্ষ্য রয়েছে। আর তা নিশ্চিত করা গেলে আওতা না বাড়িয়েও ভ্যাট আদায় বাড়ানো সম্ভব। চলতি বছর ভ্যাটের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। আগামী বাজেটে ভ্যাটের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হচ্ছে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা।