6th, December, 2023, 9:44 am

ফোনেই নির্দেশ আসে হত্যার – জুয়েল ও কাউন্সিলর বাপ্পী হত্যাই টার্গেট ছিল র্দূবৃত্তদের

মীর আলাউদ্দিন : জামিল নামে একজনের নির্দেশে ওই তিন সন্ত্রাসী পল্লবী থানা যুবলীগের সভাপতি তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পী ও সাধারন সম্পাদক জুয়েল রানাকে হত্যা করার মিশনে নেমেছিল। এরমধ্যেই জুয়েল রানাকে বাদ রেখে শুধু বাপ্পীই ছিল তাদের মূল টার্গেট। পল্লবী থানার অভ্যন্তরে বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনায় বেড়িয়ে এসেছে বেশ অবাক করা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। গোপন সূত্রে পাওয়া এক ভিডিও ফুটেজের বরাত দিয়ে জানা যায় আটককৃত তিনজনকে দিয়ে জামিল নামের এক সন্ত্রাসী ফোনলাপের মাধ্যমে খুন করার ছক করেছিল। সে খুনের তালিকায় প্রথম দিকে পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল থাকলেও পরে নির্দেশ আসে জুয়েলকে হুমকি দিয়ে অন্য একজনকে হত্যা করতে, যদিও তার নামটি পরিষ্কার করে জানা যায় নি। সেই জন্য অগ্রিম ৫ হাজার টাকাও তাদের দেওয়া হয়েছিল এবং বাকিটা কাজ শেষে প্রদান করাসহ তাদের লাইফ গড়ে দেবার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ মোতাবেক সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি কে তা পরিষ্কারভাবে জানা না গেলেও বিভিন্ন হুমকি ও ফোন কল রেকর্ড এর মাধ্যম ইঙ্গিত দেয় ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, পল্লবী থানা যুবলীগের সভাপতি ও ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরি ( বাপ্পি ) র দিকে। প্রাপ্ত ওই ভিডিও ফুটেজে র্দূবৃত্তদের একজন কোন একটা বিষয়ে বাপ্পির ভাইয়ের সাথে কথা বলতে চেয়েছিল বলে শোনা যায়। আবার অন্যদিকে ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাপ্পিকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও মারার পরিকল্পনা চলমান ছিল বেশ আগে থেকেই। একটি ভয়েস কলের রেকর্ড পর্যালোচনা করে জানা যায় বাবু নামে একজনের সাথে কাউন্সিলর বাপ্পির বেশ সময় ধরে কথকোপন হয়। সেই কথকোপনে জানা যায় কাউন্সিলর বাপ্পি নিজের হেফাজতের জন্য বাবুর মাধ্যমে এক লক্ষ টাকাও প্রদান করেছিল। এবং ওই ভয়েস কলের বরাত দিয়ে জানা যায় জামিল ও লাক্কু বাপ্পির ঘোরতর শত্রু হয়ে কাজ করছে। তারা বিভিন্নভাবে হত্যার ছকও করেন তারা। বাপ্পির সর্মথকরা বলেন কাউন্সিলর নির্বাচনের পর তার ওয়ার্ডে চাঁদাবাজি বন্ধে ও তার নিয়ন্ত্রাধীন এলাকা সন্ত্রাসী মুক্ত করতে সোচ্চার ছিলেন এ কারণে অনেক সন্ত্রাসীদের শত্রু হয়ে গেছিলেন বাপ্পি চৌধুরি যার কারণে হয়তো তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলে তারা দাবি করেন। প্রসঙ্গত গত ২৯ জুলাই সকালে পল্লবী থানার অভ্যন্তরে বিকট শব্দে একটি বোমা বিষ্ফোরিত হয়। এতে ৪ পুলিশ সদস্যসহ মোট ৫ জন গুরুত্বর আহত হয়। ঘটনার পরপরই সেখানে প্রশাসনের বিভিন্ন বাহিনী হাজির হয়ে বাকি বোমা গুলি নিষ্কিয় করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের পরে এক প্রেস বিফিং জানানো হয় ২৮ জুলাই কালশী কবরস্থান এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে বোমা ও পিস্তল উদ্ধার করা।

আটককৃত তিনজন – শহিদুল,রফিকুল ও মোশারফ

বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রত্যেককে অস্ত্র মামলায় সাত দিন এবং বিস্ফোরক মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মোশাররফ। তবে এই অভিযুক্তদের ঠিক কখন গ্রেফতার করা হয় এই সময় নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার দু’দিন আগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দু’জনের পরিবার অভিযোগ করেছে। অন্যদিকে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইসিস দাবি করেছে, তারা পল্লবী থানায় ঐ বোমা হামলা করেছে। যদিও পুলিশ আইসিসের দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছে, পল্লবী থানার ঘটনার সাথে জঙ্গী সম্পৃক্ততা তারা পায়নি। ঘটনার ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য ২৮ জুলাই বুধবার ভোরে তাদের গ্রেফতারের সময় গুলিসহ দু’টি পিস্তল এবং ওজন মাপার যন্ত্র উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছিল এবং সেই ওজন মাপার যন্ত্রে গ্রেফতারকৃতদের লুকিয়ে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছিল। থানার ভিতরে বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনাকে পুলিশের অদক্ষতাকেই দায়ী করে সোশাল মিডিয়ায়ও বেশ ঝড় ওঠে। ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে নেওয়া হলে আদালতে রিমান্ডে শুনানিতে এই গ্রেফতারকৃতদের আইনজীবীরা বলেন থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার দু’দিন আগে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হলেও ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান মানা হয়নি। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মিরপুরের বাউনিয়াবাঁধ এলাকার সি ব্লকের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন যাত্রবাহী বাসের চালক। তার স্ত্রী জেসমিন আকতার জানিয়েছেন তার স্বামীকে গত ২৭শে জুলাই বিকেলে সাদা পোশাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এলাকার লোকজন বললো যে, এরা ছিল ডিবি পুলিশের লোক। তারপর আমরা ডিবি অফিসে গেলাম, তারা বললো তারা নেয়নি। তখন তারা এলাকাবাসীর বর্ণনা অনুযায়ী ঘটনা তুলে ধরে থানায় জিডি করেছিলেন।

Comments are closed.

     More News Of This Category

follow us on facebook page

error: sorry please