নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়ন থেকে বিবি মরিয়ম (২৬) ও তার আড়াই বছরের শিশু কন্যা সানজিদা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নিহত মরিয়মের স্বামী আকবর আলী বাবর (২৮) পলাতক রয়েছে।শুক্রবার (২৯ মে) সকাল ১০টার দিকে ৯৩শল্লা গ্রামের কাজিরটেক এলাকা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হচ্ছেন ওই এলাকার আকবর আলীর স্ত্রী বিবি মরিয়ম ও তার মেয়ে সানজিদা আক্তার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮-৯ বছর আগে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের গাংচিল এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে মরিয়মের সাথে শল্লা গ্রামের সোলাইমানের ছেলে আকবর আলী বাবারের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে সুজন (৬), সোহান (৪) নামে দুই ছেলে ও সানজিদা নামে এক মেয়ে। বাবর পেশায় কৃষক। স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও মাকে নিয়ে একসাথে থাকতো বাবর। ঈদের আগে তার ছোট ভাই ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে বাবরের পরিবারের সাথে ছিল। আজ সকাল থেকে বাবর, তার ভাই ও মা পলাতক রয়েছেন। নিহত মরিয়মের ভাই মো. আব্দুল করিম অভিযোগ করে বলেন, সানজিদা জন্ম নেওয়ার দুই মাস আগে মরিয়ম বাবার বাড়িতে ছিল। এ সুযোগে বাবর তাদের পার্শ্ববর্তী এক স্কুলছাত্রীর সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একটি শালিস হলেও ওই মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছাড়েনি বাবর। এনিয়ে মরিয়ম কিছু বলতে গেলে বাচ্চাদের সামনে তাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। এছাড়াও কারণে-অকারণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মরিয়মকে প্রায় মারধর করত বাবর। বৃহস্পতিবার রাতে বাবর তার পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় মরিয়ম ও সানজিদাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। পরে মরিয়মের মরদেহ পুকুরের পাশের একটি কুল (বরোই) গাছের সাথে ঝুলিয়ে ও সানজিদার মরদেহ পুকুরে রেখে পালিয়ে গেছে। অপর দুই ছেলে বাড়িতে আছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবদুল্যাহ বলেন, পার্শ্ববর্তী এক স্কুল ছাত্রীর সাথে বাবরের পরকিয়া সম্পর্ক ছিল বলে স্থানীয় যুবকরা জানিয়েছে। গত কয়েক মাস আগে এলাকার কয়েকজন যুবক বাবরকে আটক করে কিছু টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। তবে বিষয়টি নিয়ে বসার জন্য উভয় পক্ষকে বললেও তারা কেউ তাতে সাড়া দেয়নি।
ঘটনাস্থল থেকে সুধারাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাউসার জানান, অর্ধনগ্ন অবস্থায় মরিয়মের মরদেহ নিজ বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত ছিল। তার শরীর পানিতেও ভেজা ছিল। একই পুকুরে ভাসমান ছিল তার শিশু কন্যার মরদেহ। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহত গৃহবধূর স্বামী বাবর পলাতক রয়েছে। ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত বাবরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।