বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সদর বাজার, বাশাইল হাট সহ উপজেলার হাট-বাজার গুলোর একই দৃশ্য। শত শত মানুষ জটলা বেঁধে মাছ-সবজি কিনছেন। সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা, বরং ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে যেন জমজমাট চারপাশ। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস আতঙ্ক এমন মুহুর্তে সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে চলছে প্রশাসনের সামনে। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায়, বরিশালের আগৈলঝাড়া সদরের বাজার এলাকায় সরেজমিনে সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেখা গেছে, বাজার এলাকায় আছেন অর্ধশতাধিক মাছ ও শতাধিক সবজি ব্যবসায়ী, মুদি, ফল ও চায়ের দোকানসহ অন্যান্য দোকানপাট। প্রতিটি দোকান ঘিরে মানুষের ভিড়। কোথাও কম, কোথাও বেশি ক্রেতা। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণে সরকারি সিদ্ধান্তে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা। কিন্তু এই বাজারে তার কোনো বালাই নেই। একে অপরের সঙ্গে শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছিলেন ক্রেতারা। কোনো কোনো ক্রেতাকে অবশ্য নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। পুঁই, ডাঁটা ও লাউ-কুমরারডগাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক বিক্রি করছিলেন মাস্ক পরা মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি। জতিস রায় জানান, সবজি বাজার সকাল থেকেই শুরু হয়। তবে মাছের বাজার শুরু হয় সকাল ৮টার পর থেকে। তবে সকালে ক্রেতারা বাজারে এলেও সকাল ৯টার পর থেকেই মূলত ভিড় বাড়ে। অন্য সময়ের তুলনায় ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হলেও সেটা খুব বেশি যে কম, তা নয়। আগের তুলনায় তাঁর শাক এখন ২০ ভাগের মতো কম বিক্রি হয়। এছাড়াও উপজেলা সদর বাজারে বসে নগরবাড়ী এলাকার বাসিন্দা হাবিল হাওলাদার (৩৭) বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার মানুষজনদের বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছেন। এটি মেনে আমি এতদিন বাসার বাইরে বের হয়নি। আসার পথে রাস্তাঘাট ফাঁকা পেয়েছি। হাঁটতে হাঁটতেই আগৈলঝাড়া বাজারে এসেছি। এখানে এসে তো আগেরই মতোই দেখি বাজারে ভিড়বাট্টা। তাহলে মানুষজন সামাজিক দূরত্ব মানছেন কই? ভয় নিয়ে প্রয়োজনীয় সবজি ও মাছ কিনে নিচ্ছি। কার সঙ্গে কখন শরীর লেগে যায়, সেই আতঙ্কে আছি। একাধিক সবজি ও মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবাজারের আশপাশের নগরবাড়ী . ফুল্লশ্রী . সুজনকাঠী সহ অন্তত ২৫টি এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা নিয়মিত বাজার করতে আসেন। ২৩ মার্চের পর টানা কয়েক দিন করোনা-আতঙ্কে বাজারে মানুষজনের উপস্থিতি কম ছিল। গত কয়েক দিন ধরে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে। আগের মতো না হলেও অন্তত ৬৫ শতাংশ ক্রেতারা এখন নিয়মিতই বাজার করতে আসছেন। আগৈলঝাড়া বাজার ছাড়াও উপজেলার সব বাজার গুলোর একই চিত্র। তবে উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকায় জসিম হাওলাদারে নেতৃত্বে সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে চলছে মোল্লা পাড়া পানের আরৎ। এছাড়াও রামের বাজার ও ঐচারমাঠ এলাকার পানের পানের আরৎগুলোর একই চিত্র। সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে পানের আরৎ চালানোর কারণে জনমনে আতঙ্ক ছরিয়ে পরেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকটি বাজারে ভ্রমমান আদালত পরিচালনা করলেও ওইসময় বাজার নিয়ন্ত্রনে থাকলেও প্রশাসন বাজার থেকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে আবারও আইন অমান্য করে সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে চলছে ওইসব বাজার গুলো। বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখতে ব্যার্থ প্রশাসন বলে অভিযোগ করেছে সাধারন জনগন। প্রতিটি বাজারে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারী বারানোর দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নিয়ে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।