রাত পৌনে চারটা, মিরপুর পল্লবী বাউনিয়াবাঁধ এলাকার ডি ব্লকের আরবান শিশু পার্ক এর পিছনে থাকা ফোম ফ্যাক্টারীর সাথের ঘরে হঠাৎ করেই দাউ দাউ আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠে। ভিতর থেকে বাচ্চাদের করুণ আর্তনাদ আল্লাহ গো বাচাঁও চিৎকারের আহাজারীতে বেরিয়ে আসে এলাকার সব মানুষ। ছুটে আসা লোকজন উদ্ধারের জন্য ব্যকুল হয়ে এগিয়ে গেলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দরজায় আটকানো থাকা তালা। শিশু বাচ্চাদের আত্ন চিৎকার সইতে না পেরে এলাকার সবাই বাইরে থেকেই ছিটাতে থাকে পানি বালু। ভেতরের বুকফাটা গগন বিদারক চিৎকারে ছল ছল হয়ে উঠে সকলের চোখ। কিছু সময় পরেই বন্ধ হয়ে যায় সেই আল্লাহ গো বাচাও মা গো বাচাও আত্নচিৎকার। দিশেহারা হয়ে যায় উপস্থিত জনতা, মরিয়া হয়ে উঠে সবাই আগুন নেভাতে, নিভিয়েও ফেলে আগুন। কিন্তু ততক্ষনে আগুনে পুড়ে সব শেষ। সবার চোখের সামনে আগুনের পুড়ে শেষ হয়ে যায় ভেতরে থাকা তের বছর বয়সী কন্যা জান্নাত,আট বছরের ছেলে কাওছার ও তাদের মা কল্পনা বেগম।
মিরপুর পল্লবী বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় একটি বাড়িতে অগ্নি কান্ডের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজন মারা গেছে। গতকাল রাত আনুমানিক চারটা দিকে এই অগ্নি কান্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিভানোর চেষ্টা করে ভোর পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ভিতর থেকে বের করা হয় ১৩ বছরের মেয়ে জান্নাত, ৮ বছর বয়সের ছেলে কাউসার ও তাদের মা কল্পনা বেগমের (৪০) পুড়া দেহ। আগ্নিকান্ডের ঘটনার সময় মৃত কল্পনার স্বামী বাসায় ছিলেন না বলে জানা যায়।
আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া জান্নাত এর ছবি
আগুনে পোড়া বাড়ির আবশিষ্ঠ বলতে কিছু নেই, সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয় জনগন বলেন, এই বাড়িটিতে তার চার জন বসবাস করতো, নিহত কল্পনা ও তার স্বামী তাদের দুই সন্তান। থাকার রুমের পাশে একটা রুম নিয়ে কাটা ফোম এর ব্যবসা করতো তারা। ঘটনা স্থলে স্থানীয় লোকজনেরদের সাথে কথা বলে জানা যায় ,নিহত কল্পনার কাটা ফোমের কারখানা থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। যখন আগুন লাগে তখন তাদের রুম তালা বদ্ধ ছিল। এই কারনে আগুন লাগার পর নিহত কল্পনা তার ছেলে/মেয়েকে নিয়ে ঘর থেকে বের হতে পারেনি। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পল্লবী থানার পুলিশ ঘটনাস্খলে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন নিহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।