ননসেন্স আর মোর হ্যাপী…তারা মৃতদেহের উপর দাঁড়িয়েও প্রাণ খুলে হাঁসতে পারে… ”
=============================
এ কী কাহিনী শোনালো খবর বাংলাদেশ? এতদিন তো শুনেছি-হাট দখল, ঘাট দখল, মঞ্চ দখল, ক্ষমতা দখলের কথা। নির্বাচনকালে ভোট কেন্দ্র দখলের কথাও শোনা যায়। কিন্তু খোদ মন্ত্রী কর্তৃক শত বছরের পুরনো কবরস্থান দখল করে অট্টালিকা গড়ে তোলার কথা জানা গেল পত্রিকাটির প্রচ্ছদ রিপোর্টের সূত্রে। কী সাংঘাতিক ব্যাপার! মানুষের অপরাধ প্রবণতা কোন্ পর্যায়ে পৌঁছালে ৮৪টি কবর জুড়ে বহুতল বাড়ি নির্মাণ করতে পারে-তা কল্পনা করতেও গা শিউরে উঠে। মৃত মানুষের হাড় হাড্ডির সঙ্গে রড জোড়া দিয়ে দিয়ে লিংটন ঢালাই করলে বিল্ডিং বেশি মজবুত হয় কী না কে জানে? কী সর্বনাশ! কত জঘণ্য মানসিকতা!! কবরস্থান দখল করে নিজেদের সুখ সংসার রচনাকারী ননসেন্সদের উদ্দেশ্যেই প্রয়াত কবি সৈয়দ হক লিখেছিলেন : “ননসেন্স আর মোর হ্যাপী…তারা মৃতদেহের উপর দাঁড়িয়েও প্রাণ খুলে হাঁসতে পারে। কবি সৈয়দ হকের সেসব ননসেন্স তো এমপি, মন্ত্রী হতো না-কখনও তারা নেতা, পাতি নেতাও হতো না। তারা বড়জোর নর্থবেঙ্গল ছেড়ে এসে দৈনিক ভিত্তিতে শ্রম বিক্রি করে ক্ষুধা নিবারণের পদক্ষেপ নিতো। কিন্তু এ জামানার ননসেন্স মহলটি গায়ে একবার মুজিবকোর্ট লাগাতে পারলেই হলো, আর তাকে পায় কে? ক্ষমতাসীন সরকারের খুটি হিসেবে পরিচিত এমপি-মন্ত্রীদের অপকর্মের বেহালচিত্র ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও প্রতিবেদন আকারে দাখিল হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কেবলমাত্র করোনা দুর্যোগ ভয়াল রুপ নেয় কি না সেটাই পর্যবেক্ষণ করছে শীর্ষ মহল। করোনার আঘাত না হলেই অপরাধী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা সহসাই ‘হাসিনা দুর্যোগের’ ভয়াবহতা টের পাবেন।আমি মাঝে মধ্যেই নৌপরিবহণ মন্ত্রনালয় নিয়ে কিছু ভাবতে গেলেই অবাক হই। যে বা যারা এ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পান তারাই কয়লার বর্ণে কুলুষিত হয়ে যান। কেউ কেউ জন্মসূত্রে অপরাধী রুপেই মন্ত্রনালয়টিতে সওয়ার হন, আবার কেউবা মন্ত্রনালয়ে পা দিয়েই লুটেরা অপরাধীতে পরিনত হন। দৈনিক খবর বাংলাদেশ তার প্রথম পাতার পুরোটা জুড়ে কবর দখলের কাভারেজ দিয়ে দায়িত্ববান মন্ত্রীর জঘণ্যকান্ডের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এমন সাহসী সাংবাদিকতাকে স্যালুট জানাতে কারো কার্পণ্য করার কথা নয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের সব অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক এমনই যুদ্ধসাজে। নীতি নৈতিকতা, আদর্শচ্যুতিসহ ধর্মবিরোধী ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েও মন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী আরো কতক্ষণ, কতদিন ‘পদটি কুলুষিত’ করার সুযোগ পান সেটাই এখন দেখার বিষয়।
(সাঈদুর রহমান রিমন – সিনিয়র রিপোর্টার বাংলাদেশ প্রতিদিন)