মোঃ জাফর : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, বিদ্যুতের ভুতুরে বিলের নামে সিরিঞ্জ দিয়ে জনগণের রক্ত টেনে নিচ্ছে সরকার। শনিবার (২৭ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়রে সামনে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’এর উদ্যোগে বিদ্যুত-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন আইন (সংশোধন) বিল সংসদে উত্থাপনের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। মানববন্ধনে মহানগর দক্ষিনের সহসভাপতি নবী উল্লাহ নবী, ফিউচার অব বাংলাদেশের শওকত আজিজ, সাজ্জাদুল হানিফ বক্তব্য রাখেন। এ সময়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা কেজি সেলিম, ফয়সাল প্রধান, আহম্মেদ উল্লাহ, জুনায়েদ চৌধুরী, বাবু তানভীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা বিদ্যুতের ভুতড়ে বিলের প্রতিবাদে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করে। রিজভী বলেন, বাড়িতে বাড়িতে বহু লোক আমাদেরকে বলছেন যেখানে বিদ্যুত বিল হওয়ার কথা ১ হাজার থেকে ১১‘শ ১২‘শ টাকা। সেখানে ২০ হাজার ২৫ হাজার টাকা বিল আসছে। এই ভূতড়ে বিলের জন্য গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে সরকারের এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, সরকার এদিকে তাঁকাচ্ছেন না। তারা নির্লজ্জভাবে গায়ের জোরে আবার বছরের কয়েকবার বিদ্যুত ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে। তিনি বলেন, এখন সিরিঞ্জে করে যেমন রক্ত টান দেয়- এই সরকার জনগনের শরীরে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত টান দিচ্ছে এই বিদ্যুত-জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সরকার সংসদে বিল উপস্থাপন করেছেন। বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের টাকা দরকার। এই টাকা কোথায় যাচ্ছে জানেন? এটাও গতকাল বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে- ৫ হাজার কয়েক‘শ কোটি টাকা সুইস ব্যাংকের জমা আছে। এই টাকা কার? এই টাকা মন্ত্রীদের, এই টাকা আমলাদের, এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। তিনি বলেন, আজ ১১ থেকে ১২ বছর জনগনের এই টাকা আত্মসাত করে সুইস ব্যাংক ফুলে-ফেঁপে একেবারে বিশাল মহিরুহে পরিণত করেছে তারা। এখন আরো টাকা দরকার, সুইস ব্যাংকে আরো কালো টাকা পাঠাতে হবে-এই লক্ষ্য নিয়ে বছরে কয়েকবার বিদ্যুত-জ্বালানি তেলের দাম তারা বৃদ্ধি করছে। করোনাভাইসরাস সংক্রামণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ মরছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, অক্সিমিটার নেই, চিকিতসা নেই ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া। অতো কথা হয়ত গণমাধ্যমে আসছে কিন্তু সব আসছে না। রিজভী বলেন, হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগী কোনো চিকিতসা পাচ্ছে না। কারণ ওরা জনগনকে সুবিধা দেয়া, জনগনের কষ্ট লাঘব করার কোনো কাজ তারা করেনি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙে গেছে, একেবারে ভঙ্গুর। মানুষ এখন কুকুর-বিড়ালের মতো রাস্তায় মরা যাচ্ছে, করোনা আক্রান্ত মানুষ রাস্তায় মারা যাচ্ছে-এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার উপহার, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উপহার। তিনি বলেন, সরকার মনে করে আমি যেটা বলব সেটাই আইন। কেউ কিছু বললে লাল ঘরে পাঠিয়ে দেবো, বেশি কথা বলো না, বেশি কথা বললে আমি একেবারে লালঘরে পাঠিয়ে দেবো। বিরোধী দল ও বিরোধী মতের জন্য একেবারে পারমেনেন্ট করে রেখেছে লাল ঘর, ইটের লাল দেয়ালের মধ্যে বন্দি করে রাখব। রিজভী বলেন, আমাদের বন্দি করবেন তারপরেও আমরা প্রতিবাদ করবো। আমাদেরকে মামলা দেবেন,আমাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাবেন-আমরা তো প্রস্তুত সব সময়। কিন্তু আপনার অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার-জুলুম আর এদেশের জনগন কখনোই মেনে নেবে না।