নিজেস্ব প্রতিনিধি : ডিপিডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সম্প্রতি বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল ও অতিরিক্ত রিডিং নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকার অধিবাসীদের অনেকেই বলছেন অতিরিক্ত বিলের কথা। এই বিষয়ে এর আগেই দু:খ প্রকাশ ও সমন্বয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান। এরপরও নানা সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ায় আবারো সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি। পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন ‘করোনার এই পরিস্থিতিতে সবাই যখন নিরাপদে থাকতে ঘরবন্দী অবস্থায় রয়েছে সেই সময়টাতে সবার ঘরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে ডিপিডিসি’র প্রতিটি কর্মী সর্বোচ্চ আন্তরিতার সাথে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এরপরও কিছু গ্রাহকের কাছ থেকে আমরা অসাঞ্জস্যপূর্ণ বিলের অভিযোগ পেয়েছি। আর এর মধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি সেটি সমন্বয় করার। কেন এই অবস্থার তৈরি হলো সেটিরও একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। বিকাশ দেওয়ান বলেন, প্রথমে যখন নারায়ণগঞ্জ এলাকা লকডাউন করা হলো তখন সেটা ঢুকে বিল করা সম্ভব ছিল না। সারা দেশের করোনা পরিস্থিতির চেয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই এলাকাতেই ডিপিডিসি সেবা দিচ্ছে। আমরা একদিকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদু্যুৎ সরবরাহের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা কিন্তু ডাক্তার নার্সদের মতোই সেবা খাতের ফ্রন্ট লাইন ফাইটার। অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। লকডাউনের কারনে স্বাস্থ্যঝুকি থাকায় কিছু বিলে অসামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার চেক করে বিল সমন্বয়ের নির্দেশ প্রদান করেছি। ডিপিডিসির অনেক গ্রাহকই এ নিয়ে ভোগান্তি বা হয়রানির শিকার হন। এ অভিযোগ প্রসঙ্গে বিকাশ দেওয়ান বলেন, দেখুন গ্রাহকরাই আমাদের মূল চালিকাশক্তি। তাদের সেবা দিতেই আমরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই আমরা কোনোমতেই চাইবো না কোনো গ্রাহক হয়রানির শিকার হন। এরপরও সুনির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ও প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগেই জানানো হয়েছে যদি কোন গ্রাহক মনে করেন যে তার বিদ্যুৎ বিল খুব বেশি হয়েছে তাহলে অবশ্যই ডিপিডিসি’র কল সেন্টার (১৬১১৬) বা সংশ্লিষ্ট এন ও সি এস দপ্তরে অভিযোগ করলে তা সমাধান করা হবে। উল্লেখ্য প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান ডিপিডিসির ইতিহাসে অন্যতম সফল ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেয়ার পর ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ- ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ প্রকল্প বাস্তবায়নে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে ঢাকা শহরে লোডশেডিং এবং সিস্টেম লস এর পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। ডিপিডিসির অগ্রযাত্রা প্রসঙ্গে প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিতে ডিপিডিসি বদ্ধপরিকর। গ্রহকদের আধুনিক সেবা দিতে আধুনিক মিটার ব্যবস্থা বা স্মার্ট গ্রিড ও অ্যাডভ্যান্স মিটারিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার (এএমআই) বাস্তবায়নসহ অন্যান্য উদ্যোগে ডিপিডিসি এখন একটি ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান। আমরা গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে চব্বিশ ঘনটা কল সেন্টার চালু করেছি। সিস্টেম লস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। সর্বোপরি বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’ আপাদমস্তক সৎ ও স্পষ্টবাদী বিকাশ দেওয়ানের জন্ম ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি রাঙামাটিতে। ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে যোগদানের আগে প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর প্রধান প্রকৌশলী (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সাবেক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, চট্টগ্রাম, সংক্ষেপে বিআইটি, চট্টগ্রাম যা বর্তমানে চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (চুয়েট) থেকে বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) ডিগ্রী অর্জন করেন।