বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার শাজাহানপুরে তালাক প্রাপ্তা নারীকে ধর্ষন ও খুনের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে এ হত্যাকান্ডের সাথে নিহতের সাবেক স্বামী জরিত । খুনি সাবেক স্বামী সোহেল সাকিদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃত সোহেল সাকিদার ধর্ষণ এবং হত্যার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। সে গাবতলী উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জাহার আলীর পুত্র। স্বামীর সাথে তালাক হয়ে যাবার পর বেশ কয়েক মাস আগে শাজাহানপুর উপজেলার পশ্চিম আশেকপুর গ্রামের পৈত্রিক বাড়ীতে ২সন্তান নিয়ে ফিরে সালমা (২৭)। পাশ্ববর্তী একটা ব্যাগ ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো সে। সেখানেই পৈত্রিক বাড়ীর সন্নিকটে সড়ক বিভাগের জায়গায় তৈরি করা একটি ঘরে সালমা তার দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতো। গত ২৮ এপ্রিল সকালে এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে সালমার উল্লঙ্গ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের সুরতহাল রির্পোট তৈরীকালে মরদেহের গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়া এবং তার নিজের পায়জামা দিয়ে দুইহাত বাঁধা দেখতে পায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করা হয়- ধর্ষণের পর ওড়না পেঁচিয়ে খুন করা হয়েছে। মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে সালমার সাবেক স্বামী সোহেল সাকিদার (৩০) তাকে উত্যক্ত করত এবং মেরে ফেলার হুমকি দিত। সেই সূত্র ধরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে জানতে পারেন সাম্প্রতিক সময়ে সালমা শহরের কলোনি এলাকার এক ব্যক্তির সাথে অনেক সময় ধরে কথা বলতেন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করে আটক করার পর তিনি পুলিশকে জানান, তার মোবাইলটি কয়েকদিন আগে সিমসহ হারিয়েছে। তখন তদন্তকারী দল উচ্চতর তদন্ত কৌশল ব্যবহার করে হারিয়ে যাওয়া সেই মোবাইল ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করে। পরে গ্রেফতার করলে দেখা যায় তিনি সালমার সাবেক স্বামী সোহেল । সোহেলকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সোহেল আরো জানায় ধর্ষন ও হত্যাকান্ডে আরো ২জন জরিত ছিল । তবে পুলিশ বলছে, তার প্রমান তারা পাননি । পুলিশকে দেয়া তথ্য সোহেল জানায়, স্ত্রীর সাথে তালাক হয়ে যাবার বেশ কিছুদিন পর কলোনি এলাকার চুরি যাওয়া এক ব্যাক্তির ফোন দিয়ে নিজের পরিচয় গোপন করে সাবেক স্ত্রী সালমার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে সে। এরপর ২৭ এপ্রিল রাত দশটার পর সালমাকে বাড়ির বাইরে আসতে বলে । সালমা তাকে চিনতে পেরে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলে সোহেল গামছা দিয়ে তার মুখ বেঁধে ফেলে এবং পরবর্তীতে হাত বেঁধে ধর্ষণ করে এবং সালমার ওড়না গলায় পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজের বাড়িতে চলে যায়। পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত সোহেল বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসমাউল হুসনা এর আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে ।