নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরের বাঙ্গরা থানার ঐতিহ্য মেটংঘর জমিদার বাড়ি। কালের সাক্ষী হয়ে আজও মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়িটি দেখার জন্য অনেকেই ছুটে আসেন। এককালে যাদের ছিল জাঁকজমকপূর্ণ বিলাস বহুল জীবনযাত্রা জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পর থেকে তারাই পতিত হয় দৈন্যদশায়। জমিদারদের এককালের দালান-কোঠার ধ্বংসবাশেষ এখনো কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এর ইট সুরকি খসে-খসে পড়ছে। খসে যাওয়া দালানটির ইটের ফাঁকে-ফাঁকে এখন গজিয়েছে ডুমুর ও বটবৃক্ষ আর জমেছে শেওলার আস্তরণ। বর্তমানে এ বাড়িটিতে জমিদারের বংশধর শ্রীমতি চম্পক লতা রায় বসবাস করছেন। তিনি বলেন, আমার দাদা শ্বশুর ছিলেন জমিদার। এক সময় বহু লোকজন এ বাড়িতে আসতেন। বাঙ্গরার রুপবাবুর বংশের লোকজনও এ বাড়িতে আসতেন। জমিদারদের প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল অনেক বেশি। সবাই তাদেরকে শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন।
জমিদারদের উত্তররসূরী দয়ালসাহ (৮১) বর্তমানে ঢাকা বসবাস করছেন। তিনি বলেন, চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর গ্রামের জায়গা-জমি বিক্রি করে স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসি। এখন ছেলের সাথে কোন রকমে শেষ বয়সটা কাটিয়ে যাচ্ছি। আমার বাবা দারিকসাহা বৃটিশ শাসনামলে জমিদারী লাভ করেন। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়া আগ পর্যন্ত এলাকার রাস্তাঘাট, সেতু নির্মাণে সহযোগীতা করেন। বিভিন্ন জনহিতকর কাজে জমি দান করেন। এর মধ্যে মন্দিরের নাম বিষেশভাবে উল্লেখযোগ্য। মন্দিরের পাশে রাম কেশব সাহের সমাধি সম্বলিত একটি মঠ রয়েছে। এখানে জমিদারগণ ৩০ শতক জমি দেবোত্তর সমপ্তি হিসাবে দান করেন। মন্দিরটি জমিদার বাড়ির একটু পূর্ব দিকে অবস্থিত। জমিদারের বংশধর চম্পক লতা রায় দিকদর্শনকে জানান, জমিদারী থাকাকালে আমাদের পূর্বপুরুষগণ এলাকার শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে এবং মানব কল্যাণে ব্যাপক ভূমিকা রেখে গেছেন। আজ আমরা পূর্ব পূরুষের ধ্বংসাশেষে শুধুই দাঁড়িয়ে আছি, সমাজের জন্য কিছুই করতে পারছি না। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় দুঃখ।