জনি নামের এক যুবককে থানায় নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন নিহত জনির মা খুরশিদা বেগম। সাক্ষ্য দেয়ার সময় নিহত জনির মা বলেন, বিয়ের আসর থেকে এসআই জাহিদ আমার ছেলেকে (জনি) তুলে নিয়ে যায়। পল্লবী থানায় নিয়ে জনিকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে আমার ছেলের মৃত্যু হয়। রোববার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। এ দিন তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামীকাল সোমবার (১৮ নভেম্বর) দিন ধার্য রয়েছে। নিহত জনির মা ছাড়াও এ দিন আদালতে সাক্ষ্য দেন বিল্লাল নামে এক যুবক। তাকেও এসআই জাহিদ বিয়ের আসর থেকে তুলে নিয়ে থানায় নির্যাতন করেন। এ মামলার ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় সাদেকের ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে চলে যেতে বলেন। সুমন চলে গেলেও পরদিন আবার এসে আগের মতো আচরণ করে। তখন জনি ও তার ভাই তাকে (সুমন) চলে যেতে বললে সুমন পুলিশকে ফোন করলে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন ধাওয়া দিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। থানায় নিয়ে জনিকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে জনির অবস্থা খারাপ হলে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এসআই আবদুল বাতেন, এসআই রাশেদ, এসআই শোভন কুমার সাহা, কনস্টেবল নজরুল, সোর্স সুমন ও রাসেল। ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তকালে পুলিশের এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু, সোর্স সুমন ও রাশেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।
Leave a Reply