নিজেস্ব প্রতিনিধি : বিগত সকল বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে উত্তরবঙ্গে এবারের চা উৎপাদন। গত ৩১ ডিসেম্বর সদ্য সমাপ্ত বছরে উত্তরবঙ্গের ৫ জেলায় ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫৭৫ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যা গত ২০১৮ সালের তুলনায় ১১ লাখ ৩২ হাজার কেজি বেশি। বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গের ৫ জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, নীলফামারী, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট-এ ৯টি নিবন্ধিত ও ১৯টি অনিবন্ধিত চা-বাগান এবং ৬৫৫৮ টি ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগানের( নিবন্ধিত ১৩৫৮) মোট ৮৬৮০.৬৮ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। এসব চা-বাগানসমুহ থেকে ২০১৯ সালে ৪ কোটি ৬৯ লাখ ২১ হাজার ৬৫১ কেজি সবুজ চা পাতা উত্তোলন করা হয়েছে। যা থেকে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার ১৮ টি চলমান চা কারখানা থেকে ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫৭৫ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যার মুল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা। তিনি জানান, বিগত বছরের (২০১৮) তুলনায় সদ্য সমাপ্ত ২০১৯ চা উৎপাদন মৌসুমে ১০৩৬ একর চা আবাদী জমির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১১ লাখ ৩২ হাজার কেজি চা বেশি উৎপাদন হয়েছে। অর্থাৎ বিগত বছরের তুলনায় ৫৭ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিগত বছরগুলোর সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। সুত্রমতে, উত্তর জনপদের পঞ্চগড়ে চা চাষ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর পঞ্চগড় অন্যতম চা অঞ্চল হিসেবে এরই মধ্যে দেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। পঞ্চগড় ইতোমধ্যে দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। একসময়ের পতিত গো-চারণ ভূমি ও দেশের সবচেয়ে অনুন্নত জেলা এখন চায়ের সবুজ পাতায় ভরে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে চোখ জুড়ানো নৈসর্গিক সৌন্দর্য। দেশের বাজারসহ আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করেছে পঞ্চগড়ের চা। সুত্র জানায়, ২০০০ সালে উত্তর জনপদে সর্বপ্রথম চা চাষ শুরু হয়। পরবর্তীতে উত্তরাঞ্চলে চা চাষ সম্প্রসারন, চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি ও চা চারা উত্তোলনসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্প কাজ শুরু করে। এতদঞ্চলের চা চাষীদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বল্প মুল্যে চারা বিতরন, প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা, চা চাষে উদ্ধুদ্ধকরন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান, কর্মশালা আয়োজন, চাষীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও কীটনাশক যন্ত্রসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামাদি প্রদানের জন্য এই প্রকল্পকে ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।