নিজেস্ব প্রতিনিধি : করোনার কারণে আটকে গেছে দেশের বেসরকার স্কুল-কলেজের সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন। কবে তারা বেতন হাতে পাবেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। আর বেতনভাতা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এমনকি বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বেতন না পেয়ে অনেককেই মানবতের জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি ছুটি এবং আরো কিছু জটিলতার কারণে বিলম্ব হলেও বেতন দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছু কাজ শেষে বেতনের অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠানো হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত করোনা ভাইরাসের কারণেই বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা আটকে গেছে। মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি সুবিধা ছাড় দেয়া হয়নি। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাথে সাথে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিজ বাসায় অবস্থান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ে বেতন পেলেও এখনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সরকারি বেতনের অংশ (এমপিও) ছাড়করণ হয়নি। এ অর্থ ব্যাংকে জমা দেয়া হলেও তা শিক্ষক-কর্মচারীদের হাতে পৌঁছতে আরো অর্ধমাস সময় লেগে যাবে। এ কারণে সারা দেশের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ। সূত্র জানায়, মার্চ মাসের বেতন ও ভাতা এখনো ছাড় হয়নি। আজকালের মধ্যে এ অর্থ ছাড় হলেও তা তুলতে আরো ১৫ দিনের বেশি লেগে যাবে। তাছাড়া সামনে আসছে রোজা ও রোজার ঈদ। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদ বোনাস মাত্র ২৫ শতাংশ, যা ১৬ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পর শিক্ষক-কর্মচারীদের দিনরাত বাসায় অসহনীয় সময় পার করতে হচ্ছে। তার মধ্যে মাস শেষ হলেও এখনো এমপিওভুক্তির অর্থছাড় দেয়া হয়নি। বেতন না পেয়ে শিক্ষকরা বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না। আর সরকার ব্যাংকের লোনের কিস্তি আদায় বন্ধ করার ঘোষণা দিলেও ব্যাংকগুলো নানা অজুহাত দেখাচ্ছে। শিক্ষকরা প্রায় ১৫ দিন ঘরে বসা। ঘরে নিত্যপণ্যের মজুদ প্রায় শেষ। পকেট খালি, চারদিকে অন্ধকার হয়ে এলেও শিক্ষকরা নিজের অভাব ও অভিযোগের কথা কাউকে বলতে পারছে না। এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের সাড়ে চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এমন পরিস্থিতিতে রয়েছেন। অন্যদিকে এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো: গোলাম ফারুক জানান, বেসরকারি শিক্ষকদের বেতনভাতা ছাড়ের সব কাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই বেতন-ভাতার চেক ব্যাংকে দেয়া হবে। এ নিয়ে শিক্ষকদের দুশ্চিন্তা করতে হবে না।